× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিনোদন
My job is to create poetry with architecture
google_news print-icon

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’

আমার-কাজ-স্থাপত্য-দিয়ে-কবিতা-নির্মাণ
ইসলামাবাদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি ভবনের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান স্থপতি রফিক আজম অ্যাকাডেমিক মহলে পরিচিত ‘গ্রিন আর্কিটেক্ট’ হিসেবে। প্রকৃতি ও স্থাপত্যের মেলবন্ধন তার কাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য। সম্প্রতি নিউজবাংলার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নেয়া হয় তার বারিধারার অফিসে। তিনি তার কাজ ও দর্শন, গ্রিন আর্কিটেকচারের ধারণা, ভবন নির্মাণের উপকরণ, ঢাকার দেয়াল সংস্কৃতি, বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্প, রাজধানীর নগরায়ণ নিয়ে কথা বলেছেন। নিউজবাংলার পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তরুণ সরকার।  

রাজধানীর, বিশেষত পুরান ঢাকার পার্কগুলোর স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য বদলে যাচ্ছে। পার্কের দেয়াল উঠে যাচ্ছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যে কেউ যেকোনো দিক দিয়ে যেকোনো সময় পার্কে প্রবেশ করতে পারবে, বের হতে পারবে।

এরই মধ্যে শহীদ মতিউর পার্ক, বাহাদুর শাহ পার্ক, নবাবগঞ্জ পার্ক, ইসলামবাগ পার্ক, তাঁতীবাজার পার্ক, হাজী আবদুল আলীম মাঠসহ পুরান ঢাকার ৩০টি মাঠ ও পার্কের দেয়াল উঠিয়ে দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে।

ঢাকায় পার্কের দেয়াল উঠিয়ে দেয়ার ডিজাইন শুরু করেছিলেন স্থপতি রফিক আজম। ঢাকেশ্বরী অঞ্চলের হাজী আবদুল আলীম খেলার মাঠের ডিজাইনের জন্য তিনি গত জুন মাসে পেয়েছেন ডিএনএ প্যারিস ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড-২০২১।

বাংলাদেশের স্থপতিদের মধ্যে রফিকই সর্বাধিক আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। প্রাপ্ত অ্যাওয়ার্ডের মধ্যে ইউরেশিয়ান অ্যাওয়ার্ড-২০২০, আর্ক এশিয়া গোল্ড মেডেল-২০১৭, ওয়ার্ল্ড আর্কিটেকচার কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড-২০১২, দ্য সাউথ এশিয়ান আর্কিটেক্ট অফ দি ইয়ার-২০১২, ওয়ার্ল্ড আর্কিটেকচার কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড-২০০৮, দি কেনেথ এফ. ব্রাউন এশিয়া প্যাসিফিক কালচার অ্যান্ড ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড-২০০৭, ইউএসএ অন্যতম।

স্থপতি রফিক আজমের কাজ ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। ইতালীয় প্রকাশনা সংস্থা স্কিরা ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশ হয়েছে ‘রফিক আজম: আর্কিটেকচার ফর গ্রিন লিভিং’ শীর্ষক গ্রন্থ। ইউরোপে তাকে নিয়ে নির্মাণ হয়েছে চলচ্চিত্র।

স্থপতি রফিক আজমের কাজের মূল বৈশিষ্ট্য উন্মুক্ততা, সবুজসংলগ্নতা ও স্থানীয় জ্ঞানের প্রয়োগ। তিনি প্রতিটি বহুতল ভবনে রাখেন বাগান।

পাঁচ তলার ওপর সুইমিং পুল রাখেন না, রাখেন ‘সুইমিং পন্ড’। ভবনের তিন তলায় তিনি তৈরি করেন ‘বৃষ্টিঘর’, ‘গোস্বাঘর’। ভবনের ছাদে থাকে ধানক্ষেত।

তার ডিজাইন করা প্রতিটি ভবনের ভেতর ও বাইরে থাকে সবুজের উপস্থিতি। তার ডিজাইনের মূল লক্ষ্য প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস। অ্যাকাডেমিক মহলে তিনি পরিচিতি পেয়েছেন ‘গ্রিন আর্কিটেক্ট’ হিসেবে।

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
মেঘনা রেসিডেন্স গুলশান


সম্প্রতি নিউজবাংলার পক্ষ থেকে স্থপতি রফিক আজমের বারিধারার অফিসে তার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এ সময় তার কাজ ও দর্শন, গ্রিন আর্কিটেকচারের ধারণা, ভবন নির্মাণের উপকরণ, ঢাকার দেয়াল সংস্কৃতি, বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্প, রাজধানীর নগরায়ণের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়।

নিউজবাংলা: আপনার কাজকে ‘আর্কিটেকচার ফর গ্রিন লিভিং’, ‘গ্রিন আর্কিটেকচার’ ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। কেন বলা হয়ে থাকে, একটু ব্যাখ্যা করবেন?

রফিক আজম: গ্রিন আর্কিটেকচার শব্দ আকারে অনেক ছড়িয়ে গেছে। গ্রিন আর্কিটেকচার কথাটার আসল সৌন্দর্য হচ্ছে আপনার এবং প্রকৃতির মাঝে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখে বসবাস করা। আপনি সূর্যের আলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। বাতাসকে সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। পাখিকে বাঁচতে দেবেন, গাছকে বাঁচতে দেবেন। এর বেনিফিট আপনি পাবেন। অক্সিজেন তৈরি করবে, কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করবে। এভাবে সম্পূরক আমরা। মানুষ একা বাঁচতে পারে না। তাদের নিয়ে আপনি বাঁচবেন।

মেইনলি ব্যাপারটা হচ্ছে, কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেশি তৈরি হলে তো বিপদ। গাছ তা গ্রহণ করে নিচ্ছে। কার্বন রিডিউস হচ্ছে। এটা করা হচ্ছে গ্রিন। আর আপনি এনার্জি কম খরচ করবেন। আপনি যে জ্বালানি খরচ করেন, এটা তৈরি করতে যে পরিমাণ ফুয়েল লাগে, সাপোর্ট লাগে, তাতে অনেক বেশি ট্যাক্সেশন করতে হয় পৃথিবীকে।

প্রকৃতির মধ্যে যে রকম জীবনযাপন, সে রকম করে বাঁচা। এয়ার কন্ডিশন ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে। এয়ার কন্ডিশন একটি বড় সমস্যা। একটা গ্লাসের বিল্ডিং বানালেন। এটা গ্রিন হাউস ইফেক্ট করে। সূর্যের আলো হচ্ছে ওয়ানওয়ে ট্রাফিক। সূর্যের আলো যখন গ্লাসে ঢোকে আর বের হতে পারে না। শর্ট ওয়েব ও লং ওয়েবের একটা খেলা।

ধরুন একটা গাড়ি রোদে দাঁড়া করে রাখবেন। কত গরম হয়ে যায়; আগুন হয়ে যায়। বিল্ডিংও তাই হয়। এই গ্লাসের বিল্ডিং ঠান্ডা রাখার জন্য আপনি সারাক্ষণ এসি চালান। এনার্জি কনজাম্পশন বেড়ে যায়। এ জন্য পৃথিবীকে ট্যাক্সেশন করতে হয়। আপনি মাটি থেকে টেনে ফুয়েল বের করেন। এতে কার্বনকে ওপেন করা হয়। এগুলো বন্ধ করতে বলা হচ্ছে। কম করতে বলা হচ্ছে।

এখন বন্ধের উপায় কী, সেটা জানতে হবে। এটা নলেজের খেলা। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে আপনি সবসময় খাদ্য উৎপাদন করবেন। কার জন্য? নিজের জন্য, পাখির জন্য, কীটপতঙ্গের জন্য। আপনি একাই খাবেন? এ জন্য আপনি যে গাছ লাগাবেন, শুধু অক্সিজেন দেবে, তা নয়। সে ফুল দেবে। সে ফল দেবে। সে পাখিকে খাওয়াবে। আপনাকে ভিটামিন দেবে, আপনার বাচ্চাকে ভিটামিন দেবে। এইভাবে সম্পূরকভাবে বেঁচে থাকা। এটাকে বলে গ্রিন।

পানির ব্যবহার পৃথিবীর একটি বড় জিনিস। পৃথিবীতে পানি আছে দুই-তৃতীয়াংশ। এর মধ্যে মাত্র শতকরা এক ভাগ বিশুদ্ধ সুপেয় পানি। সৃষ্টিকর্তা এক ভাগ পানি মাটির নিচে পাঠান। এই পানিকে আমরা বের করে ব্যবহার করি। মাটির নিচ থেকে, বৃষ্টি থেকে যে সুপেয় পানি আসে, তা মোট পানির এক ভাগ। এই জন্য বলা হয়, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যদি লাগে, তবে পানির জন্যই লাগবে।

এই সমস্ত জিনিস নিয়ে যারা কাজ করেন, এই প্যাসিভ এনার্জি নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের গ্রিন বলা হয়ে থাকে। আমি যেহেতু প্যাসিভ এনার্জি নিয়ে কাজ করি, খুব চেষ্টা করি; সবসময় পেরে উঠি না। সেই জন্য কেউ কেউ আমার কাজ গ্রিন আর্কিটেকচার বলে থাকেন। এই হচ্ছে গ্রিন আর্কিটেকচারের মেইন ধারণা।

নিউজবাংলা: আপনার ডিজাইনে তিনটি বিষয় প্রাধান্য পায়। আলো, বাতাস ও পানি। বিষয় তিনটি..

রফিক আজম: সৃষ্টিকর্তা কিন্তু কোরআনে এক জায়গায় বলেছেন, তোমরা কি দেখো না, সূর্য আমি এক জায়গা থেকে তুলি না। সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে। এটা সাধারণ জ্ঞান। কিন্তু ক্রিটিক্যালি যদি দেখেন, গভীরভাবে যদি দেখেন, সূর্য কিন্তু মুভিং। গরমকালে-বর্ষাকালে সে উঠবে ঠিক পূর্ব-উত্তর দিক থেকে। উত্তর দিকে চলে যায়। উত্তর-পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিমে গিয়ে অস্ত যায়। এই সূর্যটা সরতে সরতে মার্চ মাসে পুবে চলে আসে। মার্চ মাসে দিন-রাত সমান থাকে যেদিন, তখন সূর্য পুব দিকে টু দি পয়েন্টে উদিত হয়। শীতকাল এলে সে চলে যায় দক্ষিণে। উদিত হয় দক্ষিণ-পুবে। অস্ত যায় দক্ষিণ-পশ্চিমে। তখন কিন্তু একটা হেলানো সূর্য। অনেকখানি হেলে যায়। ৩৭ ডিগ্রি হেলে যায়। এ জন্য আমাদের গ্রামে একটা কথা প্রচলিত আছে:

‘দক্ষিণ দুয়ারি স্বর্গবাস

উত্তর দুয়ারি সর্বনাশ

পুবে হাঁস

পশ্চিমে বাঁশ।’

কথাটা প্রচলিত হয়ে আসছে। খনার বচন। জ্ঞানী লোকেরা দীর্ঘদিন ধরে চর্চা করে এটা দাঁড় করিয়েছেন। এটাই হচ্ছে আমাদের দেশের শক্তি। এটা আমাদের দেশে বসবাস করার সৌন্দর্য।

দক্ষিণ দুয়ারি স্বর্গবাস কেন? গরমকালে সূর্য দক্ষিণ দিকে থাকে না। থাকে মাথার ওপর। সকালে ও সন্ধ্যায় থাকে উত্তরে। কখনো হেলে যায় না দক্ষিণে। ফলে গরমকালে দক্ষিণে সূর্য আপনি পাচ্ছেন না। আবার গরমকালে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে, সমুদ্র থেকে হাওয়া আসে। আর বর্ষা যখন আসে, তখন বাতাস আসে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে। এটা বৈশ্বিক বায়ু (গ্লোবাল উইন্ড)।

আগে যেটা বললাম, সেটা দেশজ বাতাস (লোকাল উইন্ড)। দুটো আসে দক্ষিণ দিক থেকে। দক্ষিণ খোলা রাখলে গরমকালে বাতাস পাবেন। যেই শীতকাল আসল, সূর্য চলে যাবে দক্ষিণে। সূর্যের হেলান দেয়া আলো দক্ষিণ দিকে চলে আসবে আপনার ঘরে। আর হাওয়া।

শীতকালে হাওয়া আসে উত্তর দিক থেকে। হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাস। হাওয়া নাই, কিন্তু রোদ আছে। বাসা উষ্ণ। এটা সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেশন। এটা যদি অস্ট্রেলিয়ায় করেন, তাহলে আপনি মারা যাবেন। ওরা থাকে সাউথ হেমিস্ফিয়ারে। ওর নর্থই সৌন্দর্য। আমরা নর্থ হেমিস্ফিয়ারে। আর আমাদের সৌন্দর্য দক্ষিণ।

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
স্থপতি রফিক আজম


এগুলো হচ্ছে লোকাল জ্ঞান। যে এলাকায় বাস করেন, সেই এলাকার জ্ঞান। স্থানীয় জ্ঞানের ভিত্তিতে বাড়ি নির্মিত হলে অনেক বেশি সৌন্দর্যমণ্ডিত হবে, প্রাকৃতিক পরিবেশে বাস করতে পারবেন। আপনি কোন গাছ লাগাচ্ছেন, তা জানতে হবে।

গাছ সম্পর্কে, প্রকৃতি সম্পর্কে, পানি সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি নিমগাছ লাগান, নিম এমন একটা গাছ, সবচেয়ে বেশি অক্সিজেন দেয়; সবচেয়ে লম্বা সময় অক্সিজেন দেয়। আগে বাড়ির দক্ষিণে নিমগাছ লাগাত বাঙালিরা। কিন্তু নিমগাছ কোথায় গেল? এখন রাস্তায় রাস্তায় মেহগনি গাছ লাগায়। কেন লাগায়? কারণ জ্ঞানের অভাব।

আপনি জ্ঞান দিয়ে দেখবেন, আপনার যা দরকার, প্রকৃতি সব আপনাকে দিচ্ছে। কিন্তু জ্ঞানের অভাবে আপনি ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে প্রকৃতি আপনার বিরুদ্ধে কাজ করছে। আপনি প্রকৃতিকে ব্যবহার করতে জানেন না।

কম্পিউটার আপনি ব্যবহার করতে জানেন না, কম্পিউটার নিয়ে কী করবেন? ইউজলেস। প্রকৃতি আমাদের সবকিছু দিচ্ছে। কিন্তু আমরা ব্যবহার করতে জানি না। এ কারণে আমরা খুব বিপদে আছি। এত কম যে মিষ্টি পানি, তার একটা সিংহভাগ আমরা পাই। সে জন্যই আমরা সবচেয়ে সম্পদশালী দেশগুলোর একটি। সবচেয়ে কম যে জিনিস ডায়মন্ড, সেটাকে বলা হয় দামি। ওটা আসলে কিছু না। তার চেয়ে অনেক দামি পানি– সুমিষ্ট পানি। সুমিষ্ট পানি থাকায় আমরা অনেক রিচ। আমাদের উর্বর মাটি আছে। এই উর্বর মাটির কারণে আমরা অনেক রিচ।

আমাদের দেশে আপনি এক শটা ফলের নাম সহজেই বলতে পারবেন। আমাদের সূর্যের আলো দেখেন। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে প্রায় ২৫০ দিন সূর্যের আলো পান। সেটা দিয়ে সৌরবিদ্যুৎ তৈরি করা যায়।

এ দেশে সব আছে। ব্যবহার করাটাই কাজ। ব্যবহার করাটাই গ্রিন আর্কিটেকচার। আমি কেন ব্যবহার করব না? আমার সব কাজে পানির ছোঁয়া থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমি ডেল্টার মানুষ। বদ্বীপের মানুষ। পানি হচ্ছে বাঙালির চিহ্ন। বাঙালি বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বন্যা, পানি ইত্যাদি চিত্র।

বন্যাকে আপনি নেগেটিভলি দেখবেন না। বন্যা না হলে আপনি মারা যেতেন অনেক আগেই। এই যে ধান উৎপাদন, শস্য উৎপাদন; বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর হয়ে থাকে। পানি চলে যাওয়ার পর পুরো দেশটাই সবুজ। আবার পানি এলে দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ডুবে যায়। পানি আসা-যাওয়ার খেলা না থাকলে, পানি না এলে শস্য উৎপাদন করা সম্ভব? সুতরাং বন্যাকে যদি হার্ডলি ম্যানেজ করতে পারেন, তাহলে মানুষ মারাই যাবে না। এখনও বন্যায় মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনা খুব কম আগের তুলনায়। কিন্তু কত লোক বাঁচে? সারা জাতি কিন্তু বাঁচে এটার ওপর।

নিউজবাংলা: আপনার কাজে ভবনের ম্যাটেরিয়ালের ক্ষেত্রেও কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। ইটের ব্যবহার হ্রাস, কংক্রিট ব্যবহারের আধিক্য, দেয়ালে প্লাস্টার বা রং না করা ইত্যাদি। পোড়া মাটির ব্যবহার একেবারেই করেন না।

রফিক আজম: পোড়া মাাটির একটা স্ট্রেংথ আছে। বাংলাদেশ একটা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। বেশ ঝুঁকিতে আছে অঞ্চলটি। ভূমিকম্পের সময় যখন চারদিক থেকে একসঙ্গে আক্রমণ হয়, এই ধাক্কাটা নেয়ার মতো ম্যাটেরিয়াল না থাকলে আপনি বাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখতে পারবেন না। একতলা ভবন হলে হয়তো বুদ্ধি করে করা যায়। কিন্তু আমাদের লোকসংখ্যা বেশি, জমি কম। ধানি জমিতে যদি বাড়ি বানিয়ে ফেলি, ধানি জমিগুলো যদি খেয়ে ফেলি, তাহলে খাব কী? সুতরাং যত কম জমি ব্যবহার করা যায়।

জমিতে উঁচা বিল্ডিং বানাই। ১০ তলা, ১৫ তলা, ২০ তলা ভবন। এই বাড়ি কি দাঁড়িয়ে থাকবে? থাকবে না। এর স্ট্রেংথ থাকতে হবে। তাই কংক্রিটের বাড়ি যদি হয়, তাহলে স্ট্রেংথ থাকবে। কংক্রিট খুব গ্রিন ম্যাটেরিয়াল না। আবার খুব বাজে জিনিসও না।

আপনাকে একটা চয়েস নিতে হবে। আমরা একটা মাঝামাঝি জায়গায় থাকি। বিল্ডিং ঘরে গ্রিন দিতে পারি, ছাদে গ্রিন দিতে পারি। প্লাস-মাইনাস করে একটা জায়গায় আসতে পারি। আমি বেঁচেও থাকব, গ্রিনও থাকবে। ব্যালেন্সটাই জীবনে আসল। আমি কংক্রিট ব্যবহার করি। অ্যাকচুয়ালি বাংলাদেশে কংক্রিট জনপ্রিয় হয়েছে আমার হাতেই।

নিউজবাংলা: আপনি কি ইটের ব্যবহার একবারেই করেন না?

রফিক আজম: করি, কম। ইটের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছি। কারণ ইট মাটি পুড়িয়ে, ধানি জমি পুড়িয়ে, কার্বন পুড়িয়ে তৈরি করা হয়। ইট তৈরির ফলে আমরা মাটি হারাতে থাকি। এতে সমস্যা হচ্ছে। ওয়েস্টে ম্যাটেরিয়াল দিয়ে রিসাইকেল করে যদি আমরা কংক্রিটের ব্লক তৈরি করি, তাহলে কিন্তু মাটি হারাতে হবে না। কিন্তু কাজ তো হয়। তাহলে কেন আমরা মাটি পুড়িয়ে, কার্বন পুড়িয়ে ইট তৈরি করব? অনেক প্রসেসের পরও গ্রিন থাকছে না।

নিউজবাংলা: আপনি কি ইটের ব্যবহার পুনর্বিবেচনা করতে বলছেন?

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
চট্টগ্রামে স্থপতি রফিক আজমের করা একটি আবাসিক ভবন


রফিক আজম:
হুম। কারণ এতে পোড়াতে হয়। মাটি নিতে হয়। আমরা কত মাটি নেব? পুরো দেশ উজাড় করে দেবো নাকি? পুরোনো বিল্ডিংয়ের ইট, রড, সিমেন্ট, খোয়া ইত্যাদি ভেঙেচুরে রিসাইকেল করা যাচ্ছে। কংক্রিটের ব্লক তৈরি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটি নষ্ট না করি, জমি নষ্ট না করি। ওদিকে আমরা যাচ্ছি। কংক্রিটের ব্লক আমরা ব্যবহার করছি। পুরোনা বিল্ডিং, বালি, সিমেন্ট মিশিয়ে আমরা বানিয়ে নিচ্ছি। এর জন্য মাটি পোড়ানোর দরকার হচ্ছে না।

আমরা আস্তে আস্তে ফেইজ আউট করছি। আস্তে আস্তে আমরা ইট থেকে সরছি। এখনও যে ব্রিক ব্যবহার করি না, তা নয়। তবে কম করি। আমরা যদি ব্রিকের ব্যবহার কমিয়ে দিই, তাহলে একটা সময় দেখবেন মাটি কেটে আর ইট পোড়াতে হচ্ছে না। বিশেষ কারণে লাগতে পারে, লাগুক। কিন্তু এটাই যদি পূর্ণাঙ্গ হয়, তাহলে সব মাটি একদিন আপনারা খেয়ে ফেলবেন। এটা কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, ‘প্লিজ, আপনারা মাটি পুড়িয়ে ব্রিক তৈরি বন্ধ করেন।’ সরকারি কাজে ইতিমধ্যেই নির্দেশনা এসেছে। প্রাইভেট কাজে হচ্ছে কিছু। সরকারি কাজে বন্ধ হয়ে গেছে।

নিউজবাংলা: কংক্রিট ব্লক কীভাবে তৈরি করেন?

রফিক আজম: ওয়েস্ট (পরিত্যক্ত) কংক্রিট। ভাঙা বিল্ডিং। ব্রিজ বানাতে গিয়ে অনেক ব্লক বানায়। এগুলো কোথায় নিয়ে যাবে? এগুলো স্ম্যাশ করে আবার কংক্রিটের ছোট ছোট ব্লক বানানো হয়, যা বাড়িঘরে লাগানো হয়। এভাবে রিসাইকেল করা গ্রিন আর্কিটেচারের অংশ। আমরা পুনর্ব্যবহার করি।

গার্বেজ সমস্যা নয়; বরং সম্পদ। কমিউনিটির সম্পদ। এই গার্বেজ দিয়ে সার বানানো হচ্ছে, ইলেকট্রিসিটি বানানো হচ্ছে। যশোরে এটা করছে। ইতিমধ্যে ওরা প্ল্যান্ট বানিয়েছে। ওরা এখন গার্বেজ পাচ্ছে না। অন্য শহর থেকে গার্বেজ আনতে চাচ্ছে; গার্বেজ তো সোনার খনি। গার্বেজ সব শেষ হয়ে যাবে। সার বানিয়ে ফেলবে; গ্যাস বানিয়ে ফেলবে। সিলিন্ডারে ভরে গ্যাস বিক্রি করবে।

গার্বেজ কি এখন আর শহর নষ্ট করবে? এইসব চিন্তাভাবনা হচ্ছে গ্রিন। রিসাইকেল করা, রিইউজ করা আর রিডিউস করা; কম ব্যবহার করা। প্রয়োজন না হলে ব্যবহার না করা। জীবনটাকে এমন বোহেমিয়ান ধরনের করবেন না, ‘যা খুশি করব।’ এটা বন্ধ করেন। গ্রিন অ্যাকটিভিস্টরা এটাকে ‘থ্রি আর’ বলে। রিডিউস, রিইউজ, রিসাইকেল।

নিউজবাংলা: আপনার কাজ অ্যাকাডেমিক মহলে প্রশংসিত। আবার ভোক্তাদের কাছেও আপনার কাজের চাহিদা বেশ। দুটোর...

রফিক আজম: হিসাব করলে হয়তো দেখা যাবে, ৫০-৬০টি অ্যাওয়ার্ড আমি পেয়েছি। যখন ইয়াং ছিলাম, তখন খুব ভালো লাগত এসব। অ্যাওয়ার্ডের জন্য জমা দিলাম। এটা পেলাম, ওটা পেলাম। বিদেশে লেকচার দিতে গেলাম, পড়াতে গেলাম। অনেক দেশে পড়িয়েছি। আমাকে নিয়ে পড়ানো হচ্ছে, বই বের হচ্ছে, আমাকে নিয়ে ইতালিতে ফিল্ম হয়েছে। এগুলো একসময় এক্সাইটমেন্ট ছিল আমার। এখন কিন্তু মানুষ যে আমার কাজ পছন্দ করে, তারা যায়, কথা বলে, তাদের জীবন বদলাচ্ছে, পরিবেশ সুন্দর হচ্ছে, তাদের বাচ্চারা মানুষ হচ্ছে। এটাই আমার পুরস্কার।

আমি অনেক বড়লোকের বাড়ি করেছি। এখনও করি। করতে আপত্তি নেই। বড়লোকের বাড়ি করতে পেরেছি বলেই অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ পেয়েছি। অন্যরা তো পয়সা দিত না। আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে তারা। এ কথাও আমি শুনেছি, ‘উনি তো বড়লোকের আর্কিটেক্ট। উনি তো অনেক টাকা নেন।’ কথাটা মিথ্যা না। তো আমার মনে মনে স্বপ্ন ছিল, আমি মানুষের আর্কিটেক্ট হব; বড়লোকের বা ধনী লোকের আর্কিটেক্ট না।

আমি সাধারণ মানুষের আর্কিটেক্ট হব। সেই কারণে হয়তো সৃষ্টিকর্তা আমার কথা শুনেছেন। আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাজ করছি। সরকারি কিছু কাজ করছি, যেগুলো সাধারণ মানুষ ব্যবহার করবে।

যখন বড়লোকদের কাজ করেছি, তখন বাউন্ডারি ওয়ালটা ফেলে দিয়েছি। বড়লোকের অ্যাপার্টমেন্টের সামনে বাউন্ডারি ওয়াল নাই। আমার অনেক বাড়ি আছে এমন। এখন অনেকেই এমন ডিজাইন করছে। আপনি যদি গুলশান এলাকায় হাঁটেন, বাড়ির সামনের দেয়ালটা গ্লাস দিয়ে তৈরি। আপনি গুলশান-বারিধারা এলাকায় হাঁটেন, তবে এ ধরনের গ্লাস দেয়া অনেক বাড়ি অ্যাপার্টমেন্ট দেখতে পাবেন। বারিধারায় আমার বাড়িতেও গ্লাসের বাউন্ডারি ওয়াল। ২০০৯ সালে যখন গ্লাসের বাউন্ডারি দেয়ালের প্রথম কাজের উদ্বোধন করি, তখন আমি নিজেও ভয়ে ছিলাম।

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
মেঘনা রেসিডেন্স গুলশান


কেন বাউন্ডারি ওয়াল ফেলে দিয়েছি? আমার মনে হয়েছে বড়লোকের বাড়ি এবং রাস্তা একে অপরের শত্রু। যখন রাস্তা দিয়ে কেউ হেঁটে যায়, তখন রাস্তার পাশে যে উঁচু দেয়াল থাকে, এর ওপর থাকে কাঁটাতারের বেড়া। লেখা থাকে কুকুর হইতে সাবধান। একটা গার্ডরুমে গার্ড বসে আছে। এটা কিসের চিহ্ন? ও বলতে চায় সাধারণ মানুষকে, ‘তুমি তো চোর। তোমার তো বিশ্বাস নাই। আমার কুকুর কামড়ে দেবে। আর যদি টপকাতে চাও, তাহলে এই তারকাঁটা দিয়ে রেখেছি, তুমি রক্তাক্ত হয়ে যাবে।’

এটার মানে কী? একটা বিরাট দেয়াল দিয়ে বাড়ি আটকে রেখেছে। তারকাঁটা আছে। গার্ড লাঠি হাতে বসে থাকে। আপনাকে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দেবে। এগুলো কিসের চিহ্ন? এগুলো সমাজের মধ্যে বিভেদের চিহ্ন। রাস্তায় যারা যায়, তারাও গালি দিয়ে থাকে। ও ব্যাটা টাকা-পয়সা মাইরা-মুইরা বাড়ি বানাইছে। এই হচ্ছে আমাদের মনে মনে কথোপকথন।

আমি ভেবেছি, এটা ভাঙতে হবে। আমি বাসার সামনে থেকে এমন ডিজাইন করেছি, ও কিন্তু ঢুকতে পারবে না বাসায়, কিন্তু বাসার সামনের অংশ, গাছগাছালি, বসার জায়গা, পানির ফোয়ারা দেখা যাচ্ছে। ওর কাছে মনে হবে: ‘বাহ! কী সুন্দর! লোকটার রুচি আছে। গ্লাসের দেয়াল দিয়েছে। ভেঙে যাবে না? লোকের সাহস আছে।’

কথাবার্তা কিন্তু চেইঞ্জ। সে কিন্তু আর গালি দিচ্ছে না। আগে ধানমন্ডিতে ছোট ছোট দেয়াল ছিল। তার মানে আপনাকে বলত, ‘দেখো, সমস্যা নেই। এটা আমার টেরিটোরি, প্রবেশ করো না।’ কত ভদ্রভাবে বলত। ‘তুমি দেখো, কিন্তু ঢুকো না।’ এটা বাড়তে বাড়তে এখন এমন হয়েছে, স্বাধীনতার পর ‘এ ব্যাটা তো চোর’, ‘ও ব্যাটা তো ডাকাত’ বলা শুরু হয়।

এই ভঙ্গুর সমাজ আমাকে খুব ব্যথা দিত। আমি কিন্তু পেরেছি, জানেন? পেরেছি। এখন ঢাকায় অসংখ্য বাড়িঘর দেখবেন, সামনে গাছগাছালি, সামনে তেমন কোনো দেয়াল থাকে না। ফাইনালি আমি ঢাকার পার্কগুলো থেকে দেয়াল ফেলে দিয়ে বলেছি, ওটা জনগণের। আমার ডেভেলপমেন্ট কিন্তু একদিনে হয়নি। গত ২৫-৩০ বছর ধরে স্ট্রাগল করছি। পরীক্ষামূলকভাবে দেখে বুঝেছি, এটা পসিবল। এটা আমার একটা কনট্রিবিউশন। সারা দুনিয়া এটা জানে।

নিউজবাংলা: গ্লাসের বাউন্ডারি দেয়াল প্রচলন করার সূচনাপর্বটি...

রফিক আজম: গ্লাসের দেয়াল উদ্বোধন করি ২০০৯ সালে, কিন্তু চিন্তাটা এসেছিল ২০০৫ সালে। ডিজাইন করা, পারব কি না, এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে করতে ২০০৯ সালে প্রথম একটি বাড়ির ডিজাইন করি আমেরিকান অ্যাম্বাসির পাশে। এ জন্য আমি সাহস পেয়েছিলাম। একটা গ্লাস যদি কেউ ভেঙে ফেলে তাহলে আইডিয়া কিন্তু বাতিল। সবাই বলল, ‘পাগল নাকি আপনি?’

খান জয়নুলের কাচের দেয়াল নামে একটা মুভি ছিল। ছোটবেলায় ওই মুভি দেখার পর মজা পেয়েছিলাম। কাচের আবার দেয়াল হয়? পাগল নাকি! একটা কাব্যিক ব্যাপার। কিন্তু আমার মনে গেঁথে ছিল। মিলে গেল। আমি কাচের দেয়াল করলাম। কিন্তু ভয়ে থাকি। প্রতিদিন ইঞ্জিনিয়ারকে ফোন করে খবর নিতাম, ঠিক আছে নাকি কেউ ভেঙে ফেলেছে? আমি ওখানে করেছিলাম। কারণ ওখানে অনেক গার্ড থাকে। আমি যদি প্রথম ভুল জায়গায় করতাম, কেউ যদি একটা গ্লাস ভেঙে ফেলত, তাহলে তো সবাই এসে বলবে, ‘জীবনে ও রকম আর করবেন না। খবরদার। দেখা হইছে, বাঙালিরা এটা মানবে না। বাঙালিদের তুমি চিনো?’

ওটা সাসটেইন করেছে, ওখানে পাহারা ছিল। লোকজন তখন বিশ্বাস করা শুরু করে, পসিবল। দ্বিতীয়বার করলাম গুলশান ক্লাবের পাশে। ততদিনে মানুষ একটু একটু করে বুঝে ফেলেছে, আরে! এটা তো থাকে। আমার দেখাদেখি অন্যরাও শুরু করল।

আপনি আজকে হাঁটলেও দেখতে পাবেন, এমন অনেক বাড়ি। সামনে কাচের দেয়াল অথবা দেয়াল নাই। বিষয়টি খুবই ইন্টারেস্টিং। কখনো কখনো গাছ দিয়ে রিপ্লেস করেছি; গাছগাছালির সংখ্যা বাড়িয়েছি। গাছের সংখ্যা তো আমাদের কম। গাছের সংখ্যা তো বাড়াতে হবে।

আমার আরেকটি কাজ কংক্রিটের ব্লকের বাড়ি নির্মাণ জনপ্রিয় করা। তবে এটা আমার আবিষ্কার নয়। আগেও অল্প কয়েকটি ছিল। সেনাকল্যাণ ভবনসহ কয়েকটি অফিস ভবন। আগে সবার ধারণা ছিল, এটা দামি জিনিস; বাণিজ্যিকভাবে নির্মাণ করা যাবে না, কিন্তু আমি প্রমাণ করেছি, এটা দামি নয়। করে করে দেখিয়েছি, এটা করা যায়। এখন ডেভেলপাররাও করে থাকে।

আগে ডেভেলপাররা বলত, ‘পাগল হইছো? লস করব নাকি?’ তখন অঙ্ক করে দেখালাম, এটা কস্টলি হবে না। অঙ্ক করে দেখানোর পর বলে, ‘তাই নাকি? দেখি তো করি।’ আর এখন বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, আপনি যদি কোনো ডেভেলপারের কাছে কংক্রিটের ব্লক ছাড়া বাড়ির ডিজাইন জমা দেন, তাহলে বলবে, ‘ভাগেন। এসব দিয়ে চলবে না।’ ঢাকায় এখন ৯০ ভাগ বাড়ি কংক্রিট দিয়ে হয়। গাছের বাউন্ডারি দেয়াল, প্রচুর গাছগাছালি, বাড়ির সামনে পুকুর ইত্যাদি।

নিউজ বাংলা: কংক্রিট তাহলে আগামী দিনে হতে যাচ্ছে প্রধান উপকরণে?

রফিক আজম: উপায় নাই। উপায় নাই। বাংলাদেশ একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। দামে কম। কিন্তু হেভি পোক্ত। ছোটখাটো ভূমিকম্পে কিছুতেই পড়বে না। এই একটা ম্যাটারিয়েল দামে কম। বিদেশে তৈরি অন্য ম্যাটারিয়েল অনেক দামি।

নিউজবাংলা: কংক্রিটের ব্লক ব্যবহারের শুরুর কাহিনিটা...

রফিক আজম: আমার ডিজাইন করার পর খুব জনপ্রিয় হয় বিষয়টি। এরপর সবাই ফলো করতে থাকে। বাংলাদেশের যত ইয়াং আর্কিটেক্ট, আমার নাম বললেই বুঝবেন, তারা আমাকে কীভাবে দেখে।

নিউজ বাংলা: আপনি প্রথম কোথায় কংক্রিটের ব্লক ব্যবহার করেছিলেন?

রফিক আজম: খাজে দেওয়ান বলে পুরান ঢাকায় একটি জায়গা আছে। সেখানে ছোট্ট একটি বাড়িতে।

নিউজবাংলা: আপনার খাজে দেওয়ান লেনের বাড়ির ডিজাইন তো বিশ্বব্যাপী আলোচিত।

রফিক আজম: ১৯৯৯ সালে ডিজাইন করেছিলাম। এটা এখন এমআইটি, হার্ভার্ডে পড়ানো হয়। খাজে দেওয়ানের বাড়িতে চার কাঠা জমির ওপর পাঁচ তলা একটি বিল্ডিং। ১৪টি পরিবার এতে বসবাস করে। ছোট্ট ছোট বাড়ি। বাড়িগুলোর আয়তন ৪০০ স্কয়ার ফুট থেকে সাড়ে ৬০০ স্কয়ার ফুট। ওটা কংক্রিট দিয়ে বানানো। এক্সপোসড কংক্রিট। আর কিছু ব্রিক।

কিছু ব্রিক দেয়া হয়েছে খরচ কমানোর জন্য। এ রকম বাড়ি বাংলাদেশে আগে আর হয়নি। কোনো প্লাস্টার নাই, রং নাই। বাড়ির ফ্রেম হচ্ছে কংক্রিট। কম খরচে স্ট্রং বাড়ি। বাড়ির ফ্রেম হবে কংক্রিটে। আর গ্যাপগুলো পূরণ করবে জানালা, ইট ইত্যাদি। দেয়ালে প্লাস্টার নাই, রং নাই। প্লাস্টার, রং উঠিয়ে দিয়ে প্রথম ডিজাইন করি খাজে দেওয়ান মহল্লায়। এটা একটা সিস্টেম। অর্গানাইজড সিস্টেম। আমার আগে কেউ করেনি; এখন সবাই করছে।

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
স্থপতি রফিক আজমের কাজের মূল বৈশিষ্ট্য প্রকৃতি ও স্থাপত্যের মেলবন্ধন


পুরান ঢাকার মানুষ তো গরিব। চিকন একটা গলির ভেতরে বাড়ি। এই যে কংক্রিটের বিম, যেটা বিল্ডিং ধরে রাখছে, তারপর কলাম আছে। তারপর ছাদ। কোনো রং নাই, প্লাস্টার নাই, ঢাকাঢাকি নাই। কংক্রিট ওপেন, ব্রিক ওপেন। এই ১৪টি বাড়িতে সবার একটি করে বাগান আছে। সেটা সাড়ে ৪০০ স্কয়ার ফুটের বাড়ি হোক, আর হোক সাড়ে ৬০০ স্কয়ার ফুটের। সততার সঙ্গে বাড়ির ভেতরে যা, বাইরেও তা। কোনো কিছু প্লাস্টার করে ঢাকি নাই। টাইলস লাগাই নাই। কোনো কিছু হাইড করি নাই। কম খরচে। এই আইডিয়াটা আমি অস্ট্রেলিয়ায়ও করেছি।

নিউজবাংলা: বহুতল ভবনের প্রতিটি বাড়িতে একটি করে বাগান থাকার আইডিয়া?

রফিক আজম: হ্যাঁ। প্রতি বাড়িতে বাগান থাকবে। এই আইডিয়াটাও আমাদের দেশে নতুন। উঁচা বিল্ডিং বানাও। আমাকে দশ তলায় পাঠাতে চান, ঠিক আছে, রাজি আছি। কিন্তু আমাকে একা পাঠাবেন না। তাহলে আমি, আমার পরিবার, বাচ্চারা মারা যাব। ওখানে একা গেলে আমার মাটি কোথায়? গাছ কোথায়? পানি কোথায়? আকাশ কোথায়? আমাকে ১০০ তলায় পাঠিয়ে দেন, আমি যাব। কিন্তু আমি মাটি চাই, গাছ চাই, ফুল চাই, ফল চাই, পাখি চাই। সব দিতে হবে। এটা একটা ফিলোসফি।

হ্যাঁ, উঁচা বিল্ডিং বানাবেন। কিন্তু মাটি দিতে হবে, পানি দিতে হবে, গাছ দিতে হবে, বাগান দিতে হবে। এটা একটা নতুন আইডিয়া। বাংলাদেশে তো অবশ্যই। আমি যখন শুরু করছিলাম, তখন পৃথিবীতেই নতুন ধরনের এই বিষয়টা তৈরি হচ্ছিল।

ধানমন্ডি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের বিপরীত দিকে তিন তলার ওপর একটা বাড়ি করেছি। নাম ‘বৃষ্টিঘর’। বৃষ্টি হলে এখানে পানি জমে। এটাই সৌন্দর্য।

লিভিংরুম থেকে বের হয়ে এখানে পানিতে পা ডুবিয়ে বসার ব্যবস্থা রয়েছে। আমেরিকায় লিভিংরুমে বসে বসে টিভি দেখে। আমাদের দেশে তা হবে কেন? আমাদের দেশে লিভিংরুমে বসে পানিতে পা ডুবিয়ে গল্প করবে। এই যে দেখেন, লিভিংরুম থেকে বের হলেই বৃষ্টিঘর।

তখন পৃথিবীও এ রকমভাবে চিন্তা করছে না। খুব অল্প কিছু মানুষ বিষয়টি নিয়ে তখন ভাবছিল। এ জন্য পৃথিবীতে আমাকে এত অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়েছে।

এক ক্লায়েন্ট বললেন, পাঁচ তলার ওপর সুইমিংপুল বানাতে। আমি বললাম, বাঙালির কিসের সুইমিং পুল? বাঙালির সুইমিং পুল দরকার নাই। আমাদের দরকার পন্ড। সুইমিং পন্ড। পুকুরে নেমে বাঙালিরা গোসল করে। আমি পাঁচ তলার ওপর পন্ড বানাব। আমাকে তখন জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘পন্ড মানে কী? সুইমিং পন্ড ও সুইমিংপুলের মধ্যে পার্থক্য কী?’

বললাম, পুকুরে নামার জন্য ঘাট থাকে। পুকুরপাড়ে জংলা থাকে। গুলশানের বাড়িটিতে ঘাটলা, জংলা নিয়ে পাঁচ তলায় পুকুর হলো। এখানে সুইমিং পুলের মতো মেশিনে পানি ট্রিটমেন্ট হয়। কিন্তু চেহারাটা দেখেন, আমাদের দেশের পুকুরের মতো। ঘাট আছে, জংলা আছে। পুকুরের পানিতে ভাসছে নৌকা। নীল রঙের সুইমিং পুলের ধারণাটি ইউরোপীয়। আমি বাঙালি। সুইমিংপুল বানাব না। আমি সুইমিং পন্ড বানাব।

এটা হচ্ছে গোস্বা নিবারণী ঘর। আমাদের দেশে আগে ছিল। পুকুরের পাড়ে একটি ঘর থাকত। রাগ হলে সেখানে গিয়ে বসে থাকত। স্বামী বা স্ত্রী তখন গিয়ে অনুনয় করত, ‘খেয়ে যাও। রাগ কোরো না।’ অ্যাংগারটা বের করে দিতে এটা ছিল সামাজিক উদ্যোগ। সেই সামাজিক উদ্যোগ কই গেল? এখন চড়থাপ্পড় মেরে দেয়, বিচ্ছেদ হচ্ছে। এমনকি খুনোখুনির ঘটনাও ঘটছে। এর কারণ হচ্ছে অ্যাংগার বের করে দেয়ার জায়গা নেই। তাই বাড়িগুলোতে আমি গোস্বা ঘর বা গোস্বা নিবারণ ঘর রাখা শুরু করি।

আমি এসব পাগলামি চিন্তা করি, করতে থাকি। অনেকেই আবার পছন্দ করেন। অ্যাংগার রিডাকশন রুম মানে এখানে বিউটিফুল মিউজিক বাজতে পারে, বিউটিফুল ভিউ পাচ্ছেন, পাশে কাঠ গোলাপের গাছ, প্রিয় আরও গাছ। পাখি বসে আছে। ফুলের সুগন্ধ আসছে। কিছুক্ষণ বসলেন, অবশ্যই আস্তে আস্তে আপনি আরও ভালো মানুষ হয়ে উঠবেন।

এই ইনগ্রেডিয়েন্ট না থাকলে বাসা হলো? বাসায় ফিরে কি শুধু ঘুমাবেন আর চলে যাবেন? সারা দিন খেটে যখন আপনি বাসায় ফেরেন, তখন জিব বের হয়ে যায়। বাসা কি শুধু ঘুমানোর স্থান? বাসায় এসে শুয়ে পড়লেন। সকালে উঠে দেখলেন, গাছ দেখা যাচ্ছে; পাখি কিচিরমিচির করছে। এ পরিবেশে নাশতা করলেন। আপনি আবার শক্তি নিয়ে সারা দিনের যুদ্ধ করতে যাত্রা শুরু করলেন। বাসা যদি আপনাকে আরও টায়ার্ড করে দেয়, তাহলে সকালে আপনি অর্ধেক টায়ার্ড হয়ে থাকবেন। সারা দিন কাজ করবেন কীভাবে? আপনাকে রিভাইটালাইজ করা, রিঅ্যানার্জাইজ করা বাসার কাজ। সেটা হতে পারে বড়লোকের বাসা, হতে পারে খাজে দেওয়ান লেনের ৪০০ স্কয়ার ফুটের বাসা। আমার আইডিয়ার কোনো পার্থক্য নেই।

ধানমন্ডির বাসাটা ৩০ হাজার স্কয়ার ফুটের। আর খাজে দেওয়ান লেনের ৪০০ স্কয়ার ফুটের বাসা। দুজনই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমি ক্লাসলেস। আমার কাছে কোনো ক্লাস নেই। যিনি আসছেন, তিনি বড়লোক হোন, আর গরিব লোক হোন, তার বাসাটি হবে পূর্ণাঙ্গ।

একটি বাড়ির নাম দিয়েছিলাম ‘স্মল ইয়েট অ্যাবানডেন্ট’। ছোট্ট কিন্তু অসীম। ছোট্ট কখনো অসীম হয়? কিন্তু আমি ‘ছোট্ট অসীম’ নাম দিয়েছি। আমরা শুনে থাকি, ‘ভাই, আমার একটি ছোট্ট আশা আছে। ছোট একটি বাসা থাকবে। ছোট্ট একটি বারান্দা থাকবে, ছোট্ট একটু উঠান থাকবে। একটু গাছ লাগাব। আমার রুমের পাশে পড়ার একটু জায়গা থাকবে। ছোট্ট একটি বাগান থাকবে।’

বলতে বলতে কিন্তু দেখবেন, তার আশা বিরাট। ছোট্ট বাসা মানে কি ছোট্ট আশা? বাসা ছোট্ট হলেও তার আশা কিন্তু অনেক বড়। ছোট বাসা কিন্তু বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে দেখে। সে এটা এনজয় করে। গাছ দেখে, বাগান দেখে। নিজের বাগান, এমনকি অন্যের বাগান। দূরের মাঠও দেখে। আকাশের তারা। কাজ করার সময় আর্কিটেক্টকে সব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

আচ্ছা, উনার বাসা ছোট। ওখানে দূরে একটি মাঠ দেখা যাচ্ছে। ওদিকে একটি গাছ দেখা যাচ্ছে। আচ্ছা, তাহলে এদিকে একটি জানালা দেই। ও, ছোট্ট বাসা থেকে ওটা দেখে বলছে, ‘ওয়াও!’ পৃথিবীকে যদি কানেক্ট করতে পারেন, প্রকৃতিকে যদি কানেক্ট করতে পারেন, তাহলে আশাটা অনেক বড় হয়ে যায়। লালন বলেছেন, যা দেহে নাই, তা দেহের বাইরেও নাই। তার মানে পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আপনার দেহে আছে।

নিউজবাংলা: ‘যা আছে ব্রহ্মাণ্ডে, তা আছে দেহভাণ্ডে।’

রফিক আজম: কী করে সম্ভব? আপনার এতটুকু দেহ, এর মধ্যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আসে কী করে? তার মানে স্কেল ভুল করা যাবে না। ছোট একটি বাসা, তার মানে এই নয়, এর মধ্যে কিছু নাই। আমি লালনকে নিয়ে কাজ করেছি। ওই কাজটি ইউরোপ-আমেরিকায় বহুল প্রশংসিত হয়েছে। গুলশানের একটি বাড়ি, বড়লোকের একটি বাড়ি। লালনের ভাষায় করা এটি। নাম ‘আনফোল্ডিং নাথিংনেস’।

আপনি তখন উন্মুক্ত করতে থাকবেন সবকিছু, তখন আপনি শূন্যতাকে উন্মুক্ত করবেন। শূন্যতাই উন্মুক্ততা।

লালনের মতে, দেহে দুটি পার্ট আছে। ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়।’ তার মানে উনি দেহকে একটি খাঁচা বলে বিবেচনা করছেন।

‘বাড়ির কাছে আরশিনগর।’ এগুলো কী? খাঁচা হচ্ছে বডি। আর চিন্তাগুলো হচ্ছে অচিন পাখি। ‘ধরতে পারলে মনবেড়ি দিতাম তার পায়।’ অর্থাৎ তাকে ধরতে পারা যায় না। চিন্তা আসে আর যায়। আপনার দেহের মধ্যে আসে, আর যায়। আর আসা-যাওয়ার খেলাই জীবন।

যেদিন পাখি গেল, আর এলো না, সেদিন আপনি ডেড। আপনি শেষ। আমি ভাবলাম, আচ্ছা আমি যদি একটি বাড়ি বানাই খাঁচার মতো। খাঁচা বানালাম। খাঁচার মধ্যে কী আসবে-যাবে? রোদ আসবে, চলে যাবে। বৃষ্টি আসবে, চলে যাবে। বাতাস আসবে, চলে যাবে। ফুলের সুগন্ধ আসবে-চলে যাবে। আমি কী করতে পারি?

আমি লালন যেভাবে বলেছেন, বাতচিত করা। আপনি বাতচিত করবেন, নেগোশিয়েট করবেন। ধারণ করবেন। পাত্র হিসাবে ধারণ করবেন ভালো ভালো জিনিসগুলো। তখন আপনি আদমি হবেন। মানুষ হবেন।

আপনি যদি প্রকৃতির ভালো ভালো জিনিসগুলো গ্রহণ করেন, সূর্যের আলো, বাতাস, সুগন্ধকে ধারণ করতে পারেন, তাহলে কী হবে? আদমি হবে, আর্কিটেকচার হবে। এই জন্যই দেখেন, বাড়ির মাঝখানে খোলা উঠান, ওই যে পুকুর। পুকুরে নৌকা। ওই যে দেখেন তিন তলায় ধানক্ষেত। সূর্যের আলো আসবে, আবার চলে যাবে। পূর্ব দিকে কামিনীগাছ; পূর্বের বাতাস সুগন্ধসহ বাসায় ঢোকে। ওই যে দেখেন পুকুরপাড়ে হিজলগাছ। চিচিঙ্গা ঝুলছে। জায়গাটা একটা জঙ্গলের মতো।

ওই জায়গাটি পাখিদের জন্য। পানি পার হয়ে যেতে হয়। পাখিদের জন্য অভয়ারণ্য তৈরি করা হয়েছে। কিছু প্রজাপতি আসা-যাওয়া করে। কিছু পাখি বাসা বেঁধেছে। এই যে বাতচিত করা প্রকৃতির সঙ্গে, রোদের সঙ্গে, বাতাসের সঙ্গে, পানির সঙ্গে, বৃষ্টির সঙ্গে, ফুলের সুগন্ধের সঙ্গে। এটাই জীবন। এটাই গ্রিন আর্কিটেকচার। এটাই লালনের দর্শন।

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
সাউথ ওয়াটার ক্যারেস, বারিধারা

বিদেশে দার্শনিকদের নিয়ে কাজ হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের দার্শনিকদের নিয়ে কাজ হয়নি। যখন বিদেশে বক্তৃতা দিতে যেতাম, খুব রাগ হতো আমার। তখন বলতাম, আমিও আমাদের দেশের দার্শনিককে নিয়ে কাজ করব। আমি একবার লেকচারে বলেছিলাম, রুমির কবিতার প্রসঙ্গ।

রুমি বলেছিলেন, ‘আলো সন্ধ্যায় যখন গন্তব্যে চলে যায়, সে কিন্তু তার কাছ থেকে কিছুই নিয়ে যায় না, যাকে সে আলোকিত করেছিল।’ না, আমি মনে করি, রুমি ভুল বলেছিলেন। সন্ধ্যায় যখন সে এই বাসা ছুঁয়ে চলে যায়, তখন সে বলে, ‘আমি একটি সুন্দর জায়গা ছুঁয়ে এসেছি। আমার আনন্দ।’ এ কথা বলতে সাহস লাগে। আমি কাজের গভীরে প্রবেশ করে আনন্দ নিতে থাকি। মানুষকে আনন্দ দিতে থাকি।

নিউজবাংলা: বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পের সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলুন।

রফিক আজম: অনেক ভালো। আগের তুলনায় খুব ভালো। আমরা যখন শুরু করেছি, তখন আর্কিটেক্টদের তেমন চিনত না। আমরা কাজ পেতাম না। কাজ দিলে টাকা দিত না। একটুখানি টাকা দিতে যেন দয়া করত। ওই জায়গা থেকে আমরা ভয় পেতাম। আমরা পড়াশোনা করলাম কোন দুঃখে? এর চেয়ে ডাক্তার হতাম, ল’ইয়ার হতাম বা অন্য পেশায় যেতাম। তখন খুব কষ্ট হত। কিন্তু ধীরে ধীরে মনোযোগ দিয়ে যখন কাজ করি, কয়েকজন আর্কিটেক্ট বিশেষত মুস্তাফা খালিদ পলাশ একজন আছেন, আপনি তার নাম শুনেছেন কি না, নির্ঝরকেও বলা যায় কিছুটা। ফিল্মও বানায় সে। তারও কিছুটা অবদান আছে।

উত্তম কুমার সাহা বলে একজন আছেন। এ রকম অল্প কয়েকজন আর্কিটেক্ট কষ্ট করতে করতে মানুষজনের কাছে ইম্পরট্যান্ট হয়ে উঠল। ডেভেলপাররা আমাদের এসে ধরল। আমরাও তাদের সে রকম বিল্ডিং দিলাম। গাছগাছালিসহ কংক্রিটের বিল্ডিং। তাদের ব্যবসা বাড়ল। আর আমাদেরও পজিশন বাড়ল।

এখন তো কিছু আর্কিটেক্টকে বলা হয় সেলিব্রেটি, স্টার আর্কিটেক্ট। এখন তো আমরা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেতে শুরু করেছি। বাংলাদেশের স্থাপত্য ইন্টারন্যাশনালি ইম্পরট্যান্ট হয়ে পড়েছে।

গত দুই বছর ধরে ইউরোপে একটি এক্সিবিশন ঘুরে বেড়াচ্ছে ‘বেঙ্গল স্টিম’ নামে। বাংলাদেশের ২৯ জন আর্কিটেক্ট নিয়ে ইউরোপীয়রা নিজেরা আয়োজন করেছে। এটা আমেরিকায় যাবে। বাংলাদেশেও একসময় আসবে।

তো ইউরোপের কী এমন দুঃখ হলো যে, তারা বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পকে এমন মর্যাদা দিচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের আর্কিটেক্টরা প্রমাণ করেছে তারা মারাত্মক লেভেলে কাজ করে। আমি প্রথম ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আমাকে নিয়ে প্রথম ইন্টারন্যাশনালি বই বেরিয়েছে। তবে আমি প্রথম বলে আমি একা না। আমি শুরু করেছি। অনেক মানুষ এসে গেছে।

এখন ভয়ের জায়গা হচ্ছে, ইয়াং জেনারেশন এদিক-ওদিক দেখে কপি করে ফেলে। এই যে গভীরতা, আমি লালন নিয়ে কথা বলছি, আমি হাসন রাজা নিয়ে কাজ করেছি। বাংলাদেশের পানি, বাংলাদেশের জলবায়ু, বাংলাদেশ কোথা থেকে পানি পায়, কখন সূর্য কোথায় থাকে, এই যে জ্ঞানের বিবেচনায় কাজ করি, সেইভাবে স্কুলেও পড়ায় না। তারা চর্চাও করে না। কপি করলে আপনি কতটুকু যেতে পারবেন?

একটা দুইটা ভালো হতে পারে। সব তো ভালো হবে না। আপনি ভুল করবেন। আপনাকে গাছ চিনতে হবে। পাখি চিনতে হবে। ম্যাটেরিয়েল বুঝতে হবে। গ্রিন জিনিসটা বুঝতে হবে। ইকোনমি বুঝতে হবে। আমাদের দেশে পড়াশোনা তেমন হচ্ছে না। পড়াশোনায় গভীরতা নেই। অনেক গভীরতায় পড়ানো হয় না। ফলে ওরা শিখতে পারে না। পড়ে শেখার যে কষ্ট, সেটাও করতে চায় না অনেক সময়।

আমি তরুণদের বলব, তাদের খাটতে হবে। দেয়ার ইজ নো রয়্যাল ওয়ে ফর লার্নিং। ইয়াং জেনারেশন যদি পরিশ্রম না করে, আমাদের চেয়ে বেশি এগিয়ে না যায়, তাহলে দেশ কীভাবে আগাবে? আমার পর্যন্ত থাকলে হবে? আমরা তো এক জায়গা পর্যন্ত আসছি। আমরা তো এখন পুরান হয়ে যাচ্ছি। এ জন্য আমি মনে করি, ওদের আরও অ্যাগ্রেসিভ হতে হবে। আরও ডেডিকেডেট হতে হবে। সারা দুনিয়াতে আরও নজর রাখতে হবে। রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে।

আজকাল ক্যাপিটালিস্টরা গ্লোবালাইজেশনের কথা বলে। তারা কি গ্লোবালাইজ করেছে? প্রেম, ভালোবাসা, সমতা, অর্থনৈতিক সক্ষমতা ইত্যাদি তারা গ্লোবালাইজ করেছে? তারা করেছে অস্ত্র, যুদ্ধ, ধ্বংস। এগুলো যদি তরুণ প্রজন্ম না বোঝে…। তারা করেছে ব্যবসার জন্য। অস্ত্র বিক্রির জন্য, তাদের পণ্য বিক্রির জন্য। এগুলো কি আমরা মেনে নেব? আমরা যদি বোকা হই, তাহলে কি বুঝব এগুলো?

আমাকে রেসপন্ড করতে হবে জ্ঞানের ভিত্তিতে। আমরা যদি ওদের কথা শুনে গ্রিন আর্কিটেকচার বলতে এসি লাগাই, বলবে গ্রিন এসি। এসি তো এসিই। এখানে আবার গ্রিন কী? এমন ডিজাইন করতে হবে, যেখানে এসি লাগবে অতি নগণ্য। ফলে আমার খরচ কম হবে, প্রকৃতিকে ব্যবহার করব এবং ইমিউন থাকব।

প্রকৃতির সঙ্গে থেকে থেকে ইমিউনড হব। ভিটামিন ডি পাব। আমি কালেভদ্রে খুব যখন বাজে গরম, এক মাস তখন এসি চালালাম। ওরা শুরুই করে এসি দিয়ে।

‘কাচ লাগাও। মোটা মোটা কাচ লাগাও’। কেন কাচ লাগাব? কাচ লাগালে আমাকে বুঝতে হবে, কাচে যদি রোদ না পড়ে, কাচের ওপর যদি আমি একটা শেডিং দিই, তাহলে ভাদ্র মাসে যখন কঠিন গরম, সূর্যটা হেলে গেছে, হেলানো সূর্যটা কাচে পড়ে না। কারণ একটা হেডের মতো মাথালের মতো দিয়ে দিয়েছি, যার ছায়ায় থাকে। তাহলে আমার আর গরম লাগবে না। শীতকালে সূর্যটা যখন আরেকটু হেলে যায়, তখন যদি শেডটা বড় হয়, তখন রোদ আটকে গেলে রুম ঠান্ডা থাকবে। তাহলে রোদটাকে অ্যালাও করতে হবে।

কৃষকের মাথালের একটা মাপ আছে। মাপ হচ্ছে গরমকালে সূর্যটা যখন মাথার ওপরে থাকবে। তখন পুরো শরীর ছায়াতে থাকবে। যেই শীতকাল এসে যায়, তখন মাথালের সাইড দিয়ে রোদ তার শরীরে পড়ে। এটা ম্যাথমেটিকস।

‘আমার কাজ স্থাপত্য দিয়ে কবিতা নির্মাণ’
বহুতল ভবনেও পুকুর রফিক আজমের স্থাপত্যের অনন্য দিক


চট্টগ্রামে একটি বাড়িতে আমি মাথালের ব্যবহার করেছি। অ্যাসথেটিক হচ্ছে ম্যাথমেটিকস। আমি গণিত খুব পছন্দ করি। গণিতে যারা সিরিয়াস, তারা বলেন, গড হচ্ছে একটা সংখ্যা। আসলেই কিন্তু সংখ্যা। সম্প্রতি হলিউডে একটা ফিল্ম হয়েছে। ৩১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণকারী একজন ভারতীয় গণিতবিদকে নিয়ে; পড়াতেন কেমব্রিজে।

নিউজবাংলা: রামানুজন?

রফিক আজম: হ্যাঁ, রামানুজন। তাকে নিয়ে নির্মাণ হয়েছে মুভিদ্য ম্যান হু নিউ ইনফিনিটি। আমি মুভিটি দেখেছি।

আবার কংক্রিটের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আমি এটার আবিষ্কারক বলে দাবি করি না। পৃথিবীতে এর আগে অনেক হয়েছে। গ্রেট আর্কিটেক্টরা এর আগেও করেছেন।

আমাদের দেশে চিন্তাও করত না। দু-একটা হয়েছিল অফিস। কিন্তু বাসাবাড়িতেও এটা করা যায়। ইট লাগে, শক্তিশালী জিনিস, দেখতে খুব সুন্দর লাগে। আমাদের দেশে মাটির বাড়ি ছিল গ্রে কালারের। আমি ও রকম একটা গন্ধ পাই। আমি দাবি করছি না, মাটির বাড়ি বানাচ্ছি। কিন্তু ও রকম একটা গন্ধ পাই। ছাইরঙা লেপা বাড়ি, ও রকম একটা ছাঁচ পাই। ওটা নিজেই একটি কবিতার মতো।

আমার সৌন্দর্য পাবেন ডিটেইলসগুলোতে। প্রকৃতি, পানি, কংক্রিটকে আমি এক করে ফেলেছি। আজ থেকে ১৫ বছর আগে কেউ চিন্তা করত? এখন অনেকেই করেন। আমার চেয়ে বেশিও কেউ কেউ করতে পারেন।

আমরা তো এখন অসহায়। কাজ পাব, খেতে পাব, নাকি দুনিয়ার সাথে কমপিট করে দেখাব, আমরা কম না? আমার এমনও দিন গেছে, ইউরোপের বার্লিনের রাস্তায় হাঁটছি, আর কাঁদছি। আমরা তো কিছু করতে পারব না। ওরা এত কিছু পারে, জানে। আমাদের না আছে টেকনোলজি, না আছে প্রজেক্ট। প্রজেক্ট দেখাতে হবে। সিভিল প্রজেক্ট।

মাঠ-ঘাট দেখাতে হবে। এই যে পাঠালাম প্যারিসে অ্যাওয়ার্ড পেয়ে গেল। বড়লোকের বাড়ি বানালে আর প্রাইজ দেয় না। এখন বলে, আর্কিটেকচার হ্যাজ চেইঞ্জড। মানুষের জন্য কী করেছে বলো। ১০-১২ বছর আগে পেয়েছি। এখন কিন্তু বড়লোকের বাড়ি করলে আর পাত্তা পাব না।

অনেক আর্কিটেক্ট আছে আমাদের চেয়ে ভালো আইডিয়া দিয়ে বসে থাকে। কত আর দিব? দিচ্ছি আর দিচ্ছি। এ জন্য আমি কাজের ধারা চেঞ্জ করে মানুষের জন্য কাজ করছি। ওল্ড ঢাকায় কাজ করছি। আমার কাজ হচ্ছে কবিতা তৈরি করা। আর্কিটেকচার দিয়ে কবিতা তৈরি করা। মানুষ যেন জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে পারে, শিখতে পারে, চিন্তা করতে পারে।

নিউজবাংলা: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলবেন?

রফিক আজম: আমি এখন পুরোপুরি শহরের কাজে নামছি। দেশ বললে তো পারব না। আমি ঢাকা শহর, বিশেষ করে পুরান ঢাকার কাজ যেভাবে শুরু করেছি, নদীর ধার, পুরোনো বাড়িঘর ইত্যাদি ঠিক করে, পুরান ঢাকায় ফরেস্ট এরিয়া বানানো যায় কি না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১৮টি ওয়ার্ড পেয়েছে নতুন। ওয়ার্ড ১৮টি হলেও জায়গা কিন্তু আগের চেয়ে বেশি। ধ্বংস করার আগেই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া দরকার।

নিউজবাংলা: এখন ঢাকার বিস্তৃত হবে মূলত পুব দিকে। ঢাকার একমাত্র পুব দিকেই এখনও প্রচুর উন্মুক্ত স্থান রয়েছে। সেখানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন আবাসিক প্রকল্প করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কিছু বলুন।

রফিক আজম: ঢাকা শহরের জনঘনত্ব বেশি হয়ে গেছে। আপনি ইচ্ছে করলেই পুরান ঢাকা থেকে মানুষকে বের করে দিয়ে করতে পারবেন না। এখনই সুযোগ আছে পুব দিকে শহর ফ্লারিশ করা। কী পরিমাণ গ্রিন হবে, কী গাছ হবে, ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায় কি না, পেরিফেরাল রোড ব্যবহার করা যায় কি না, পানিকে পুরোপুরি ট্রান্সপোর্টের রোড হিসেবে ব্যবহার করা যায় কি না।

কোর ঢাকার লোককে ডিস্ট্রিবিউশন, ডিসেন্ট্রালাইজ করতে পারেন। কোর ঢাকার লোক প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৫০ হাজার হতে পারে। কোনো কোনো স্পটে ১ থেকে দেড় লাখও রয়েছে। গেন্ডারিয়ায় লক্ষাধিক লোক বাস করে। ভাবা যায় বিষয়টি?

অনেক শহর আছে, ৫ হাজার লোক বাস করে। পৃথিবীর সর্বাধিক ঘনবসতির শহরগুলোর মধ্যে মুম্বাইয়ে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৭ হাজার লোক বাস করে। ম্যানিলায় ৪০ হাজার হতে পারে। ওদের অবস্থাও টাইট। আমরা ওই জায়গায় যাব কেন? আমাদের লোকজনদের ডিস্ট্রিবিউশন করার তো এখনও সুযোগ আছে। তারা যদি চলে যায়, ট্রেনে করে অফিসে আসবে অথবা ওখানেই অফিস-টপিস তৈরি করা যেতে পারে। তখন ঢাকার লোড কমতে থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকবে।

এখন যে পরিস্থিতি, এ সুযোগ কি সবসময় পাওয়া যাবে? এখন যে এত জমি পাওয়া গেল, সবসময় কি তা পাওয়া যাবে? কোথায় অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি তথা ফরেস্ট হবে, কোথায় সেন্ট্রাল ফরেস্ট হবে, ভেঙে ভেঙে কোথায় ফরেস্ট হবে, কোথায় ট্রেন হবে, পেরিফেরাল রোড কোথায় হবে, এভাবে চিন্তা করলে ঢাকাকে দারুণভাবে ফিরিয়ে আনা যায়।

এটাকে আমি একটা অপরচুনিটি মনে করি। গ্রেট অপরচুনিটি। এইবার যদি ভুল করি, তাহলে আমাদের আর জায়গা নেই। ঢাকাকে চাইলে এখন ভালো করা যায়। ঢাকা কেন রাজনীতির রাজধানী হবে, কেন কালচারাল রাজধানী হবে, কেন বিজনেসের রাজধানী হবে? পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভাগ করা হয়েছে। পাকিস্তানের ইসলামাবাদ কিন্তু শুধু পাকিস্তানের রাজধানী কিংবা কুয়ালালামপুর কিন্তু মালয়েশিয়ার রাজধানী নয়, রাজধানী পুত্রজায়া।

কেন ঢাকার মধ্যে সব হবে? মিলিটারি, এয়ারফোর্স সব কেন ঢাকায় হতে হবে? ফ্যাক্টরিগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। এসব যদি সরিয়ে ফেলা যায়, ঢাকা হবে বাংলাদেশের কালচারাল রাজধানী অথবা বিজনেস ও কালাচারাল রাজধানী; পলিটিক্যাল নয়।

এভাবে ঢাকাকে ভালো করা যায়। সবাই মিলে বসলে আরও আইডিয়া আসবে। এটা একটা অপরচুনিটি। এটাকে কাজে লাগাতে হবে।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিনোদন
A fire broke out at the capitals childrens hospital

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের গেট। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।

আগুনে হতাহতের কোনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।

আরও পড়ুন:
সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, সরবরাহ বিঘ্নিত
হাজারীবাগে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড
চট্টগ্রামে এস আলম অয়েল মিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেট কারে আগুন
হবিগঞ্জে প্রাণের চিপস ফ্যাক্টরিতে আগুন, নিহত ১

মন্তব্য

বিনোদন
In Faridpur two laborers were killed in an organized beating over suspicion of fire in a temple

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুই শ্রমিক নিহত

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুই শ্রমিক নিহত পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। ছবি: নিউজবাংলা
স্থানীয়রা জানায়, পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। গ্রামবাসীর সন্দেহ, এখানে একটি নির্মাণাধীন প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণশ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন।

ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুই নির্মাণশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরো পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার দুইজন শ্রমিক নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রাণ হারানো দুজন হলেন মধুখালী উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)।

পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। গ্রামবাসীর সন্দেহ এখানে একটি নির্মাণাধীন প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণশ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্মাণশ্রমিকদের গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের নির্মাণাধীন একটি স্কুল ভবনের কক্ষে হাত-পা বেঁধে মেঝেতে ফেলে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর প্রথমে মধুখালী থানার ইউএনও এবং ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপরেও হামলা করা হয়।

এ সময় ফরিদপুর ও রাজবাড়ী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় এলাকাবাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পুলিশ।

খবর পেয়ে ফরিদপুর থেকে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

তিনি জানান, প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর আহতদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকার অতিরিক্ত র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্বার্থে ঘটনাস্থলে ৪ প্লাটুন বিজিবি পাঠাতে বলা হয়েছে।

ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন সমকালকে জানান, পাঁচ গ্রাম নিয়ে সেখানে পঞ্চপল্লী অবস্থিত। এলাকাটি হিন্দু বসতি অধ্যুষিত। এর মাঝে কৃষ্ণনগর নামে এক গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজের জন্য সেখানে কয়েকজন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিলেন। পঞ্চপল্লীর একদল মানুষ ওই নির্মাণশ্রমিকদের পিটিয়ে আহত করে নির্মাণাধীন স্কুল ঘরে আটকে রাখে। স্কুল ভবনের দরজা, জানালা, গ্রিল ভেঙে ফেলেন তারা। এ সময় বাইরে থেকে কেউ ওই গ্রামে যেতে পারেনি। সেখানে একটি কালী মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

তপতি মন্ডল নামে ওই গ্রামের এক নারী বলেন, ‘আমি বাড়ি গিয়েছিলাম ঘোষি নিতে। তখন ওরা (শ্রমিকরা) রড ওঠানামা করছিল আর নিজেরাই বকাবাজি করছিল। তারপর আমি চিৎকার শুনতে পাই। এগিয়ে গিয়ে দেখি, মা একদম পুড়ে গেছে। তারপর লোকজন জড়ো হয়ে গেল, এই যা। তারপর কী হলো, তা দেখিনি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফরিদপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ী জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে পরিস্থিতি মোকাবিলায়। পাশাপাশি ফরিদপুর থেকে র‍্যাব সেখানে পৌঁছেছে। থেমে থেমে সেখানে ফাঁকা গুলির আওয়াজ শোনা গেছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘এখানে কয়েকজন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিলেন। উত্তেজিত জনতা ভেতরে ঢুকে তাদের লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে মধুখালী থানার ওসি ফোর্সসহ এখানে আসে। তাদের সঙ্গে মধুখালী উপজেলার ইউএনও ছিলেন।

‘তারা এখানে এসে উত্তেজিত জনতার হাতে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত ফোর্সসহ এসে তাদেরসহ আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে ফরিদপুরে হাসপাতালে পাঠাই।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘এ ঘটনায় অনেক পুলিশ আহত হয়েছেন। তাদের দিকে ইটপাটকেল মারা হয়েছে। আমরা সারা রাতই পাহারা দিয়েছি। বিষয়টি ঢাকা থেকে আইজি স্যার নিজেও সবসময় খবরা-খবর রাখছেন।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। গ্রামবাসীর সন্দেহ এখানে একটি নির্মাণাধীন প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণশ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন। তারা এই শ্রমিকদের বেদম পিটিয়ে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে গুরুতর আহত করে।

রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পঞ্চপল্লী গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, সকাল থেকে এখানে বিজিবি মোতায়েনের জন্য চার প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল মামা-ভাগ্নের 
গরু চুরির আসামির বিরুদ্ধে বাদীকে হত্যার অভিযোগ
সড়কে প্রাণ গেল জনপ্রিয় শিল্পী পাগল হাসানের
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী নিহত, প্রাণে বাঁচল শিশুসন্তান
কাপাসিয়ায় বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার চালক নিহত

মন্তব্য

বিনোদন
An ongoing burn may continue for 72 hours

চলমান দাবদাহ ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে

চলমান দাবদাহ ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে গরমে পানিতে নামা শিশুর উচ্ছ্বাস। ফাইল ছবি
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।’

দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’

৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
তীব্র দাবদাহ: ‍চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট
এপ্রিলের এ গরম কি অস্বাভাবিক
তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে ছয় জেলায়
সপ্তাহজুড়ে বাড়বে তাপপ্রবাহ, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত অস্বস্তি বাড়াবে
দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে সারা দেশে

মন্তব্য

বিনোদন
After traveling to India 15 thousand tourists returned home in three days

ভ্রমণ শেষে ভারত থেকে তিন দিনে দেশে ফিরলেন ১৫ হাজার পর্যটক

ভ্রমণ শেষে ভারত থেকে তিন দিনে দেশে ফিরলেন ১৫ হাজার পর্যটক ভারতের পেট্রাপোলে লম্বা লাইনে ভিড় ইমিগ্রেশন সারতে পর্যটকদের পাঁচ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ছবি: নিউজবাংলা
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্র্যাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে যান। ছুটি শেষ হওয়ায় ভারত ফেরত পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। পাসপোর্টধারী পর্যটকদের পাসপোর্টের কার্যক্রম যেন শেষ করতে পারেন সেজন্য বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

যশোরের ছুটি শেষে ভারত থেকে ফিরতে শুরু করেছেন পাসপোর্টধারী পর্যটকরা। তাই বেনাপোল বন্দরে বেড়েছে যাত্রীর চাপ।

ঈদের পর বেনাপোল বন্দরে ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময়ে সাড়ে ১৫ হাজার ৪২২ জন পর্যটক দেশে ফিরেছেন।

এর মধ্যে ১৬ এপ্রিল ৪ হাজার ৯১০ জন, ১৭ এপ্রিল ৫ হাজার ৩৬৩ জন এবং ১৮ এপ্রিল ৫ হাজার ১৪৯ জন পর্যটক দেশে আসে। চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে তারা ভারতে গিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। টানা পাঁচ দিন বন্ধ ছিল দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে করে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছিল।

এতে লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা,ব্যবসা,দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে অনেকে গিয়েছিলেন ভারতে। আবার অনেকে ভারত থেকে ফিরে আসছেন। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে এখন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় বন্দরে কাজ করছে বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরের নিরাপত্তা কর্মীরা।

ভারত থেকে ফিরে আসা সুভাষ মাস্টার বলেন, ‘আমি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ঈদের ছুটিতে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। ভারতের পেট্রাপোলে লম্বা লাইনে যে ভিড় তাতে ইমিগ্রেশন সারতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে পর্যাপ্ত ডেস্ক থাকলেও অফিসার কম থাকায় আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।’

ভারত ফেরত মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ‘এবার টানা পাঁচ দিনের ছুটি পেয়ে বেড়ানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে ভারত গিয়েছিলাম। ছুটি শেষ হওয়ায় আমাকে দেশে ফিরতে হয়েছে। তবে আজ ফিরে আসার সময় বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সীমাহীন দুর্ভোগ শিকার হতে হয়েছে। ডেস্কের পরিমাণ বেশি থাকলে ও অফিসার বসেন মাত্র তিনজন, কাজ করেন ধীরগতিতে।’

এদিকে ভারত ফেরত এক পর্যটক অভিযোগ করে বলেন, ‘দূরপাল্লার বাসে সিট সংকটের কথা বলে ভাড়া বেশি আদায় করছে পরিবহণ কাউন্টারগুলো। সাধারণ সময় ঢাকার ভাড়া পরিবহণ ভেদে জনপ্রতি ননএসি ৫৫০-৭৫০ টাকা ও এসি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা হলেও কিছু কিছু পরিবহণ এখন চাইছে নন এসি ৮০০ টাকা ও এসি ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। ফেরার পথে পকেটে টাকা কম থাকায় অসুবিধা হচ্ছে।’

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করেন। ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ১৪০ কোটি টাকা আয় হয়। সে হিসাবে সেবার মান একেবারে বাড়েনি।’

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্র্যাফিক) রেজাউল করিম বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গত এক সপ্তাহে হাজার হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভারতে যান। ছুটি শেষ হওয়ায় ভারত ফেরত পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। পাসপোর্টধারী পর্যটকদের পাসপোর্টের কার্যক্রম যেন শেষ করতে পারেন সেজন্য বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ‘গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ে ১৫ হাজার ৪২২ জন পাসপোর্টধারী পর্যটক দেশে ফিরেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় মানুষ ঘুরতে ও চিকিৎসার জন্য ভারত যান। পর্যটকদের নির্বিঘ্নে দ্রুত পাসপোর্টের কার্যক্রম শেষ করতে ডেস্ক অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

মন্তব্য

বিনোদন
274 Myanmar border guards sheltered in Bangladesh

বাংলাদেশে আশ্রয় মিয়ানমারের ২৭৪ সীমান্তরক্ষীর

বাংলাদেশে আশ্রয় মিয়ানমারের ২৭৪ সীমান্তরক্ষীর পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বিজিপি সদস্যদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে নিয়েছে বিজিবি। ফাইল ছবি
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহীদের গোলাযোগ চলছে৷ মঙ্গলবার রাতেও সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সংঘাতে আরাকান বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জের ধরে প্রতিবেশী দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির আরও ১৩ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

তারা বৃহস্পতিবার টেকনাফের নাফ নদীতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে জানান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবির) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।

তিনি জানান, পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উক্ত বিজিপি সদস্যদেরকে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে। বর্তমানে বিজিপির মোট ২৭৪ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে বুধবার একজন ও আগের দিন আসা ৪৬ জন রয়েছে।

অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মুখে বুধবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তপথে বিজিপির এক সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এপারে চলে আসেন আরও ৪৬ জন বিজিপি সদস্য। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি তাদের সবাইকে হেফাজতে নিয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহীদের গোলাযোগ চলছে৷ মঙ্গলবার রাতেও সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সংঘাতে আরাকান বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা।

আরও পড়ুন:
মিয়ানমার থেকে বিজিপির আরও ৬৩ সদস্য বাংলাদেশে
মিয়ানমারে গোলাগুলি: নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন সীমান্তের লোকজন
অস্ত্রসহ বাংলাদেশে মিয়ানমারের ৯৫ সীমান্তরক্ষী: বিজিবি
পালিয়ে বাংলাদেশে মিয়ানমারের ১৪ সীমান্তরক্ষী
সীমান্তে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে বিজিবির সৌজন্য সাক্ষাৎ

মন্তব্য

বিনোদন
Death toll rises to 4 in cylinder explosion in Bhashanate

ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত বেড়ে ৪

ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত বেড়ে ৪ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। ফাইল ছবি
দগ্ধদের বাড়ির কেয়ারটেকার মো. সিফাত জানিয়েছিলেন, মশার কয়েল জ্বালাতে গেলে ঘরের মধ্যে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে, এতে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হন।

রাজধানীর পশ্চিম ভাষানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ জনে।

ছয় বছর বয়সী লামিয়া শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যায়।

এর আগে ১২ তারিখ ভোর চারটার দিকে ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনে দগ্ধ হন একই পরিবারের ছয়জন। পরে তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভর্তি করানো হয়।

ওই দিন দগ্ধ হয়েছিলেন মেহেরুন্নেসা (৬৫), সূর্যবানু (৩০), লিজা আক্তার (১৮), লামিয়া (৭), সুজন (৮), মোহাম্মদ লিটন (৫২)।

দগ্ধদের বাড়ির কেয়ারটেকার মো. সিফাত জানিয়েছিলেন, মশার কয়েল জ্বালাতে গেলে ঘরের মধ্যে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে, এতে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হন।

ঘটনার পরদিন শনিবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মারা যান দগ্ধ ৬৫ বছর বয়সী মেহেরুন্নেছা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সোয়া সাতটার দিকে মারা যান লিটনের স্ত্রী সূর্যবানু। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে মারা যান লিটন।

বতর্মানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রাণ হারানো লিটন ও সূর্য বানুর দুই সন্তান লিজা (১৮), ও সুজন (৮)।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘মিরপুরের ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় ছয়জন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছিল। আজ সকালের দিকে লামিয়া নামে এক শিশু মারা যায়। তার শরীরে ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল।’

তিনি জানান, বর্তমানে চিকিৎসাধীন দুইজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

আরও পড়ুন:
মানিকগঞ্জে দুই ভাইয়ের হাতাহাতিতে বড় ভাই নিহত
কুড়িগ্রামে নানা বাড়ির পুকুরে প্রাণ গেল খালাতো ভাইবোনের
নারায়ণগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে চীনা প্রকৌশলীর মৃত্যু
দিরাইয়ে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু
গাজীপুরে ব্যাটারি কারখানায় বিস্ফোরণে চীনের প্রকৌশলী নিহত, আহত ৫

মন্তব্য

বিনোদন
The advice given by the expert to protect the mango pieces in the heat wave

তাপপ্রবাহে আমের গুটি টেকাতে যে পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞ

তাপপ্রবাহে আমের গুটি টেকাতে যে পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞ তাপদাহ থেকে আমের গুটি বাঁচাতে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। ছবি: নিউজবাংলা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় গাছগুলোতে এবার মুকুল কম এসেছে, তবে ছোট গাছে ভালো মুকুল আছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করা গেলে কৃষি বিভাগ যে সাড়ে চার লাখ টন আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার কাছাকাছি অন্তত যাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা।’

চলমান তাপপ্রবাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান অর্থকরী ফসল আমের গুটি ঝরে পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এমনিতেই এ বছর মুকুল এসেছিল কম, গাছে যে কয়টা আমের গুটি টিকে আছে, তাপদাহের প্রভাবে সেগুলোর বৃদ্ধিও ঠিকমত হচ্ছে না বলে দাবি বাগান মালিকদের। এরই মধ্যে রোদের তাপে শুকিয়ে সেগুলো ঝরে পড়তে শুরু করেছে।

আমের গুটি যাতে শুকিয়ে না যায়, তার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, তাপদাহ থেকে আমের গুটি বাঁচাতে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে; প্রয়োজনে গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শও তাদের।

‘আমের রাজধানী’ খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার কিছুটা দেরিতেই এসেছিল মুকুল। পরিমাণেও ছিল অন্য বছরের তুলনায় বেশ কম। তারপরও শুরু থেকেই বাড়তি যত্নে বাগানগুলোতে মুকুল থেকে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে আম। তবে কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহ ভীষণ শঙ্কায় ফেলেছে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। গাছে থাকা আমের গুটির বৃদ্ধি ও টিকে থাকা নিয়ে তারা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।

তাপপ্রবাহে আমের গুটি টেকাতে যে পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞ

ছবি: নিউজবাংলা

জেলার মহারাজপুর এলাকার আম বাগান মালিক রাজন ইসলাম বলেন, ‘খরার কারণে আমের গুটির বড় হচ্ছে না, বোটা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। আকাশের পানি না হলে হয়? সেচ দিয়াও খুব বেশি কাজ হচ্ছে না, শ্যালো (সেচ পাম্প) যতক্ষণ চলছে ততক্ষন পানি থাকছে। বন্ধ করলেই সব তিলিকে (দ্রুত) শুষে লিছে (নিচ্ছে)।’

আম সংগঠনের নেতারাও বলছেন একই কথা। এ বছরের শুরু থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা আমের কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। চলমান তাপপ্রবাহ তাদের সেই দুশ্চিন্তাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আম ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর শীতের কারণে মুকুল আসতে দেরি হয়েছে, তার ওপর মার্চ মাসে অসময়ের বৃষ্টিতে একবার মুকুল ঝরে যায়।

‘তখন বৃষ্টির দরকার ছিলো না, তাই বৃষ্টির কারণে মুকুলের ক্ষতি হয়েছিল, আর এখন বৃষ্টির অভাবে গাছে যে কয়টা আমের গুটি ছিল, তাও ঝরে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন চললে ব্যবসায়ীদের আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর আম উৎপাদনের খরচ সব ক্ষেত্রেই বেড়ে গেছে। আবার এখন সেচ দেয়ার জন্য অনেকের খরচ আরও বাড়ছে। সবমিলিয়ে এ বছর খুব বেশি স্বস্তিতে নেই আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। অনেকেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’

তবে এখনই আশাহত না হয়ে বাগানের সঠিক পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়া ও তাপপ্রবাহ যতদিন চলবে ততদিন পর্যন্ত বাগানে সেচ দেয়া, তাপমাত্রা আরও বাড়লে সকালে বা বিকেলে গাছে সরাসারি পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান।

বাগান মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় গাছগুলোতে এবার মুকুল কম এসেছে, তবে ছোট গাছে ভালো মুকুল আছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করা গেলে কৃষি বিভাগ যে সাড়ে চার লাখ টন আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার কাছাকাছি অন্তত যাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা।’

আরও পড়ুন:
চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড ৪২.৬ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা
দাবদাহে পুড়ছে ইউরোপ, মরছে মানুষ
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি
ভারতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে পাখিরা
৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চুয়াডাঙ্গায় হাসফাঁস

মন্তব্য

p
উপরে