X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘মেড ইন বাংলাদেশ ফোন বিশ্বে বাংলাদেশকে উৎপাদক হিসেবে চেনাবে’

হিটলার এ. হালিম
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:১৫আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫:০৭

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সাধারণ সম্পাদক ও দেশীয় মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড সিম্ফনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহীদ জানালেন, দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার (গ্রে মার্কেট) আবার বড় হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশনের ফলে গ্রে মার্কেট নেমে গিয়েছিল ১০ শতাংশের নিচে। এখন আবার বেড়ে হয়েছে ৩০-৩৫ শতাংশ। দেশে এই সময় মোবাইল ফোনের বাজার খারাপ যাচ্ছে। ফেব্রুয়ারি থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশাবাদী তিনি।

জাকারিয়া শাহীদ আরও জানান, সিম্ফনিই ওইএম মোবাইল ফোন নেপালে রফতানি করছে। দেশের বাইরে সিম্ফনি নামেই বিক্রি হচ্ছে ফোনটি। এভাবেই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ফোন দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে চান জাকারিয়া।  বললেন, মেড ইন বাংলাদেশ ফোন বিশ্বে বাংলাদেশকে উৎপাদক হিসেবে চেনাবে।

বাংলা ট্রিবিউন: দেশে মোবাইল শিল্পের বর্তমান অবস্থা কেমন?

জাকারিয়া শাহীদ: ওভারঅল ভালো। গত এক বছর ধরে এমনই যাচ্ছে। সাধারণত বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারি অবধি বাজার ধীরগতির থাকে। ফেব্রুয়ারি থেকে ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে। আগামী মাস থেকে বাজার ভালোর দিকে যাবে বলে আশা করছি।

বাংলা ট্রিবিউন: দেশের মোবাইল ফোনের বাজার সম্পর্কে বলুন।

জাকারিয়া শাহীদ: দেশে প্রতি মাসে ২২ থেকে ২৩ লাখ ফোন বিক্রি হয়। বছর শেষে দাঁড়ায় তিন থেকে সাড়ে তিন কোটিতে। আগে ফিচার ফোন বেশি বিক্রি হতো।  এখন স্মার্টফোনের বিক্রি বেড়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারের হার এখন ৪০ শতাংশ। করোনাকালে লোকজন এ ফোন ব্যবহার করছে বেশি। ফিচার ও স্মার্টফোন বিক্রির অনুপাত এখন ৬০:৪০।  

বাংলা ট্রিবিউন: করোনা মোবাইলের বাজারে কেমন প্রভাব ফেললো?

জাকারিয়া শাহীদ: দীর্ঘ সময় বাজারে করোনার প্রভাব ছিল।  ফেব্রুয়ারির পরে যদি স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়, সবাই বের হতে পারে, তবে বছরটা ভালো যাবে। দেশের বাজার সাধারণত এপ্রিল থেকে জুলাই অবধি ভালো থাকে। এই সময়ে দুটো ঈদ থাকে। দুই ঈদেই ব্যবসা হয়। এবারও তাই হবে আশা করছি। গত বছর অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বেশি হয়েছে। স্মার্টফোনের বাজারের প্রবৃদ্ধিও ৪০ শতাংশ।  ফিচার ফোনের বাজার শেয়ার এখন ৬০ শতাংশ। 

বাংলা ট্রিবিউন: দেশের চাহিদার কত শতাংশ আমদানি হচ্ছে?

জাকারিয়া শাহীদ: আমদানি খুবই কম হচ্ছে। আইফোন  আমদানি হচ্ছে। শাওমির কিছু ফোন আসছে, মটোরোলাও আসছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি ব্র্যান্ডের দামি ফোন আসছে। মোট চাহিদার ৯০ শতাংশ ফোন দেশের কারখানায় তৈরি হচ্ছে। তবে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে গ্রে মার্কেট।  আন-অফিসিয়াল বা নন চ্যানেলে মোট মোবাইলের ৩০-৩৫ শতাংশ আসছে। সরকার হ্যান্ডসেটের রেজিস্ট্রেশন চালু করার পর গ্রে মার্কেট ১০ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। যা আবার হু হু করে বাড়ছে। 

বাংলা ট্রিবিউন: গ্রে মার্কেট মোবাইল শিল্পে কেমন প্রভাব ফেলেছে? এটা বন্ধ করতে আপনাদের কোনও উদ্যোগ থাকবে?

জাকারিয়া শাহীদ: গ্রে মার্কেট অনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় দেশে তৈরি ফোনের বিক্রি কমেছে। এই মার্কেট বন্ধের জন্য সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা উদ্যোগ নিতে পারে। মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন উদ্যোগটি ভালো ছিল। আমরা তো একটি সংগঠন। সাংগঠনিকভাবে আমাদের ক্ষমতা সীমিত।

বাংলা ট্রিবিউন: দেশে লাইসেন্স পেয়েছে ১৪টি কারখানা। কয়টি কারখানায় মোবাইল তৈরি হচ্ছে? কোন ধরনের ফোন বেশি তৈরি হচ্ছে?

জাকারিয়া শাহীদ: ১৪টি কারখানা লাইসেন্স পেলেও ১২টি কারখানায় মোবাইল তৈরি হচ্ছে। সব ধরনের ফোনই তৈরি হচ্ছে। ফিচার ফোন, মাঝারি রেঞ্জ, দামি— সবই তৈরি হচ্ছে।  দেশে তৈরি ফাইভ-জি ফোনও আসতে শুরু করেছে।

বাংলা ট্রিবিউন: আমদানি করা ফোন ও দেশে তৈরি ফোনের দামের পার্থক্য কেমন?

জাকারিয়া শাহীদ: দামের পার্থক্য করা মুশকিল। দেশেরটা কম হওয়ার কথা। কিন্তু বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটের কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। মোবাইলের বিভিন্ন কমপোনেন্টের দাম বেড়েছে। চিপ ও প্যানেল সংকট রয়েছে। স্বভাবতই দাম কিছুটা বেশি। ডলারের দামও বেড়েছে, বেড়েছে জাহাজভাড়াও। স্থানীয় কারখানাগুলো করোনার খারাপ সময়ে বন্ধ ছিল। সেসময় কর্মীদের বেতন দিতে হয়েছে। ফলে এই খাত বিশাল এক চাপ সামলে এগোচ্ছে। এ কারণে আমদানি ও দেশে তৈরি ফোনের মধ্যে দামের পার্থক্য করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে।

বাংলা ট্রিবিউন: দেশে তৈরি ফোন এখন রফতানিও হচ্ছে। এ বিষয়ে বলুন।

জাকারিয়া শাহীদ: কয়েকটি ব্র্যান্ড দেশে তৈরি মোবাইল ফোন রফতানি করছে। অন্যদের চেয়ে আমাদের পার্থক্য হলো আমরা সিম্ফনি নামেই ফোন রফতানি করেছি। যেটাকে বলছি ওইএম (অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার)। চারটি চালানের মাধ্যমে ফোনগুলো পাঠানো হচ্ছে। দুটি চালান পাঠানো হয়েছে। ফোনগুলোর দাম ৭০-৯০ ডলারের মধ্যে।  আমরা শিগগিরই ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, নাইজেরিয়া ও ওমানে রফতানি করবো।

বাংলা ট্রিবিউন: মোবাইল ফোন রফতানিকে উৎসাহ দিতে আপনাদের বিকল্প একটি প্রস্তাব আছে শুনেছিলাম।

জাকারিয়া শাহীদ: মোবাইল ফোন রফতানি করলে আমরা ১০ শতাংশ প্রণোদনা পাবো। কিন্তু এই প্রণোদনা পেতে অনেক নিয়ম মানতে হয়। প্রণোদনাটা শর্তযুক্ত। আমরা কন্ডিশনাল প্রণোদনা চাই না। আমরা চাই এটা উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। আমরা যখন ফোন রফতানি করি তখন ১০-১২ শতাংশ ট্যাক্স পড়ে যায়। প্রণোদনার সঙ্গে ট্যাক্স কাটাকাটি না করে আমাদের নগদ প্রণোদনা দেওয়া হোক। ট্যাক্স যা আসে আমরা দিয়ে দেবো।

/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাগরপথে ইউরোপে যাওয়ার তালিকায় ফের শীর্ষে বাংলাদেশ
সাগরপথে ইউরোপে যাওয়ার তালিকায় ফের শীর্ষে বাংলাদেশ
প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিলেন বাইডেন
প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিলেন বাইডেন
অবন্তিকার আত্মহত্যা: জবি সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম জামিনে মুক্ত
অবন্তিকার আত্মহত্যা: জবি সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম জামিনে মুক্ত
নাফনদ জেটিঘাট জনশূন্য, মাছ ধরা বন্ধ
মিয়ানমারে সংঘাতনাফনদ জেটিঘাট জনশূন্য, মাছ ধরা বন্ধ
সর্বাধিক পঠিত
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এবার কি ফুটপাত দখলমুক্ত হবে?
এবার কি ফুটপাত দখলমুক্ত হবে?
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার