Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মাছ চাষের ঘরোয়া পদ্ধতি রাস

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাবারের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সমতল চাষাবাদের জায়গাও কমে আসছে। তাই এই চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের কম জায়গায় বেশি খাদ্য উৎপাদন এর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণে মৎস্য সম্পদের রয়েছে বিরাট ভ‚মিকা। খাদ্য উৎপাদনের মধ্যে মৎস্য উৎপাদন একটি অন্যতম লাভজনক পেশা। কিন্তু মৎস্য চাষের জন্য প্রয়োজন জলাশয় বা পুকুর, যা দেশে দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। তাই পুকুর বা জলাশয় ছাড়া মাছ চাষের উপায় বের করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর অনেক উপায়ের মধ্যে একটি আধুনিক মৎস্য চাষ পদ্ধতি রাস (RAS)


এই পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো অল্প জায়গায় অধিক মান সম্মত মাছ উৎপাদন। এই পদ্ধতিতে পুকুরের পরিবর্তে একাধিক বিভিন্ন আকৃতির ট্যাংক ব্যাবহার করে মাছ চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিতে একই পানি পুনরায় ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন রকম ফিল্টার ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি শহরে অল্প জায়গায় এমনকি বাড়ির ছাদেও স্থাপন করা সম্ভব। এটি একটি সার্কুলার পানি প্রবাহ মেশিন যেটিতে একই পানি দিয়ে দীর্ঘদিন মাছ চাষ করা সম্ভব। কম জায়গায় নিরাপদ মাছ চাষ করে নিজের চাহিদা মেটাতে ভালোবাসেন এমন শৌখিন মাছ চাষিদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এই সার্কুলার ওয়াটারে  মাছ চাষ মেশিন।  মূলত চায়নিজ বিজ্ঞানীরা এই মেশিন বা প্রক্রিয়াটির উদ্ভাবক হলেও বর্তমানে প্রযুক্তিটি বিশে^র বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এটি স্থাপনে প্রাথমিক বিনিয়োগের পরিমান কিছুটা বেশি লাগলেও পরবর্তী ব্যবস্থাপনা ব্যয় সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী।


এই জলজ উৎপাদন প্রক্রিয়াকে একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে মাছ উৎপাদন প্রক্রিয়া বলা যায়। এই আধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়া বর্তমান সময়ের এই বিপুল আমিষের চাহিদা মেটাতে বিরাট ভ‚মিকা রাখতে পারে। বর্তমান সময়ের সকল মাছ চাষ পদ্ধিতির মধ্যে রাস সবচেয়ে দ্রæত বৃদ্ধি লাভের একটি পরিক্ষিত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে দেশি শিং, দেশি-বিদেশি মাগুর, পাবদা, টেংরা বা গুলশা, টেলাপিয়া, পাংগাস, চিংড়ি, ভেটকি ইত্যাদি নানা প্রজাতির মাছ চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ পানিতে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মাছ চাষ করা হয়। এটি মূলত ঘরের ভেতরে ট্যাংকের মধ্যে অধিক ঘনত্বে এবং একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে মাছ উৎপাদন প্রক্রিয়া। যেখানে মাছ চাষের জন্য উপযুক্ত জলাশয় বা পানি নেই, সেখানেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ খুবই লাভজনক কিন্তু এর প্রধান সমস্যা হলো শুরুতে অধিক বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়।


এই পদ্ধতিতে সাধারণত নিম্নলিখিত মেশিনারি ব্যাবহার হয়ে থাকে। যেমন- ১) কালচার ট্যাংক ২) মেক্যানিকাল ফিল্টার ৩) বায়োলজিক্যাল ফিল্টার ৪) প্রোটিন স্কিমার ৫) ইউভি   স্টেরিলাইজার ৬) পানির পাম্প ৭) অক্সিজেন জেনারেটরসহ আরো অনেক যন্ত্রপাতি ।


কিছু মেশিন প্রস্তুতকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কয়েকটি ধাপে এই ধরনের প্রজেক্ট তৈরি করে দেবার কাজ করে থাকেন। যেমন- ১) মেশিন বিক্রয় ২) খরিদ্দারের চাহিদা অনুযায়ী প্ল্যান্ট ডিজাইন করা ৩) কন্সটাকশন বা স্থাপনা তেরির কাজ ৪) পরামর্শ সেবা ইত্যাদি। শুধুমাত্র মেশিন ক্রয় করে রাস স্থাপনার কাজ যে কারো পক্ষে অসম্ভব একটি কাজ। একটি প্রজেক্ট ডিজাইন করতে কি কি মেশিন দরকার এবং কোন মেশিনের কি ধরনের ক্যাপাসিটি লাগবে তা নির্ণয় করার জন্য অনেকগুলো ক্যালকুলেশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সঠিক ক্যাকুলেশন ও ডিজাইনের উপর নির্ভর করে প্রকল্পের সাফল্য এবং আয়-ব্যয়।


মেশিন দেশি-বিদেশি হতে পারে, কিন্তু প্রজেক্ট এর ডিজাইন ও সঠিক পরামর্শ না পেলে সাধারণ চাষিদের জন্য এই প্রকল্প স্থাপনা এবং পরিচালনা সম্ভব নয়। একটি নতুন প্রকল্প শুরুর প্রথম কয়েকটি মাস খুবই ঝুঁকিপূর্ণ সময়। এই সময় ব্যাক্টেরিয়া তৈরির জন্য ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় দিতে হয়। এই সময় অভিজ্ঞতা না থাকলে ১ সপ্তাহের মধ্যে মাছ মারা যাবার সম্ভাবনা শতভাগ। তাই এই প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন লোকের মাধ্যমে প্রকল্প ডিজাইন করে কাজে হাত দিলে সফল ভাবে মাছ চাষ শুরু করা যাবে। মনে রাখতে হবে, যারা পুকুরে মাছ চাষে অভিজ্ঞ তারা এই পদ্ধতি মাছ চাষ করতে হলে এই পদ্ধতির উপর প্রশিক্ষণ নিতে হবে, অন্যথায় অতিরিক্ত খাবার দেওয়া ও অব্যবস্থাপনার জন্য মাছ মরে যেতে পারে। কেউ পোনা ব্যাবসায়ী বা পুকুরের চাষিদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এই পদ্ধতিতে চাষ করতে গেলে সমস্যায় পরবেন।


বর্তমানে জেমস্ মার্টিন অধিকারী নামে একজন উদ্যোক্তা বাংলাদেশে রাস এর মেশিনারি তৈরির কাজ হাতে নিয়েছেন। তিনি ১৯৯৬ সন থেকে দীর্ঘদিন বাংলাদেশে বিভিন্ন মেশিন তৈরীর কাজ করে আসছেন। বর্তমানে তার তৈরি রুটি মেশিন বাংলাদেশ আর্মি ও পুলিশ বাহিনী ব্যবহার করে আসছে। এই মেশিন আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হওয়ায় বিদেশ থেকে প্রচুর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তিনি শুরুর দিকে ঝজঅঈ (ঝড়ঁঃযবৎহ জবমরড়হধষ অয়ঁধপঁষঃঁৎব ঈবহঃবৎ) এর জঅঝ বিষয়ক অনেক গবেষণামূলক বই পড়ে এবং আমেরিকার ও টারকির বর্তমান সময়ের আধুনিক রাস মেশিনারির উপর পড়াশুনা করে এই কাজে হাত দেন। বিগত দিনের তার বায়োলজিক্যাল ইটিপি প্ল্যান্ট, ডবিøউটিপি প্ল্যান্ট এ হাতে কলমে কাজ করার অভিজ্ঞতা ও মেশিন ডিজাইন ও মেনুফেকচারিং এর অভিজ্ঞতা তাকে এই কাজে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও জেমস মার্টিন অধিকারী ইন্ডস্ট্রিয়াল ইলেকট্রিক সার্কিট ডিজাইন ও পিএলসি অটোমেশনে সমানভাবে দক্ষ। যে কারণেই তিনি কোন টিম ওয়ার্ক ছাড়া একাই সকল ডিজাইন সঠিক ও সফলভাবে করে থাকেন। রাস এর মেশিন ডিজাইন ও প্রজেক্ট ডিজাইনেও এর ব্যতিক্রম হবে না।


চীনা বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘রাস’ পদ্ধতির মাছ চাষ অন্য যে কোনো শিল্পকারখানার তুলনায় কোনো অংশেই কম লাভজনক নয়। স্থাপনা গড়ার পর প্রথম বছরেই উঠে আসতে পারে বিনিয়োগের সমান লাভ। যে কারণে চীনাদের এমন উদ্যোগগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখতে ছুটছেন বাঙালি উদ্যোক্তারা। চীনের জানসান এলাকার ‘রাস’ পদ্ধতির উপকরণ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানই ওয়াটার এ্যাকুয়াকালচার ইকুইপমেন্ট টেকনলজির প্রধান লিও হি বলছেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ঝুঁকি এড়াতে ‘রাস’ একটি পরীক্ষিত পদ্ধতি।

 

কৃষিবিদ এম আব্দুল মোমিন

ঊর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা, ব্রি, গাজীপুর, মোবাইল : ০১৭১৬৫৪০৩৮০, ইমেইল- smmomin80@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon